প্রতীকী ছবি
মোদী সরকার তাদের মাধ্যমে সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর কাজে নাক গলাতে চাইছে বলে অভিযোগ ওঠায় প্রসার ভারতী আজ দাবি করল, দেশের ঐক্য, অখণ্ডতা এবং সাংবিধানিক মূল্যবোধ রক্ষা করার লক্ষ্য মেনেই তারা কাজ করে। প্রসার ভারতী গঠনের আইনেই সে কথা বলা রয়েছে।
প্রসার ভারতী গত কাল সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর বিরুদ্ধে ‘জাতীয় স্বার্থ-বিরোধী’ কাজের অভিযোগ তুলেছে। লাদাখ সংক্রান্ত কিছু খবর, ভারতে চিনের রাষ্ট্রদূত এবং চিনে ভারতের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎকার প্রকাশের জেরে সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার (পিটিআই)বার্ষিক সাবস্ক্রিপশন বন্ধ করা ও তাদের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করার হুমকি দিয়ে কড়া চিঠি পাঠিয়েছিল প্রসার ভারতী।
কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম আজ প্রশ্ন তোলেন, প্রসার ভারতীর এই চিঠি কি পিটিআই-কে নাম না-করে হুমকি? কোনও সংবাদ জাতীয় স্বার্থের পক্ষে কি না, তা দেখার ক্ষমতা প্রসার ভারতীকে কে দিল? এই প্রশ্ন ওঠার পরেই প্রসার ভারতী টুইট করে জানায়, আইন অনুযায়ী তাদের দায়িত্ব হল রেডিও-টেলিভিশনের মাধ্যমে মানুষকে তথ্য, শিক্ষা, বিনোদন জোগানো। নিজের কাজ করার সময় দেশের ঐক্য, সার্বভৌমত্ব, সাংবিধানিক মূল্যবোধ রক্ষার লক্ষ্য মেনে চলা। জনসেবার জন্য খবর সম্প্রচারে প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ প্রসার ভারতী করতে পারে।
আরও পড়ুন: পিএম-কেয়ার্সে চিনা চাঁদা নিয়ে প্রশ্ন কংগ্রেসের
আজ প্রেস অ্যাসোসিয়েশন ও ইন্ডিয়ান উওমেন’স প্রেস কোর প্রসার ভারতীর হুমকি চিঠি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাঁদের যুক্তি, পিটিআই পেশাদারি দায়িত্ব পালন করছে। চিন যখন ভারতে অনুপ্রবেশ করেছে, তখন সাংবাদিকদের দায়িত্বই হল, অন্য পক্ষকে প্রশ্ন করা, কেন এমন হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রে এর গুরুত্ব বুঝতে ভুল হচ্ছে বলেও ওই দুই সংগঠনের বক্তব্য। প্রসার ভারতী সূত্রের যুক্তি, আশির দশক থেকে পিটিআই-কে সাবস্ক্রিপশন ফি হিসেবে ২০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। কোনও দায়বদ্ধতা চাওয়া হয়নি। পিটিআই-এর পরিচালন বোর্ডে কোনও জনপ্রতিনিধি নেই। সকলেই বেসরকারি সংবাদমাধ্যম সংস্থার প্রতিনিধি। ভারত-বিরোধী খবরের জন্য অসন্তোষ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বলে দেওয়া হয়েছে, এই সম্পর্ক আর টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। যদিও পিটিআই সূত্রের যুক্তি, প্রসার ভারতী পিটিআই-কে দূরদর্শন ও অল ইন্ডিয়া রেডিও-তে সারাদিন খবর জোগানোর জন্য ফি দেয়। ওই ফি পিটিআই-এর মোট আয়ের মাত্র ৬ শতাংশ। পিটিআই বিভিন্ন বেসরকারি সংবাদমাধ্যম সংস্থার সমবায়ে তৈরি অলাভজনক সংস্থা। তার বোর্ডে জনপ্রতিনিধি থাকার কোনও যুক্তি নেই। তবে পিটিআই-এর পরিচালন বোর্ডে প্রাক্তন বিদেশসচিব, প্রাক্তন বিচারপতি, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য-সহ চার জন নিরপেক্ষ ডিরেক্টর রয়েছেন।