ফাইল ছবি
পশ্চিম দিল্লির মুন্ডকার বহুতলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু তিন অসমসাহসী বাঁচিয়েছেন অন্তত এক ডজন মানুষকে। বহুতলের মালিক মণীশ লাকরাকে রবিবার গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
দুই সন্তানের মা, বছর বাহান্নর মমতা দেবীর স্বামী প্রতিবন্ধী, ফলে মমতা দেবীই একমাত্র রোজগেরে। দিন আটেক আগে ওই বহুতলের একটি কারখানায় চাকরি শুরু করেছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘যখন আগুন লাগল তখন সকলে পাগলের মতো এ দিকে-ও দিকে ছোটাছুটি শুরু করল। দেখলাম কয়েক জন অজ্ঞান হয়ে গিয়েছেন।’’ অল্প কিছু ক্ষণের মধ্যেই দমকল বাহিনী ক্রেন নিয়ে এসে জানলার কাচ ভেঙে উদ্ধারের কাজ শুরু করে। মমতা দেবী বলতে থাকেন, ‘‘মেয়েগুলি অসহায়ের মতো দৌড়দৌড়ি করছিল। ওদের একে একে দড়ি দিয়ে নীচে নামিয়েছি। সকলকে নামানোর পরে জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে নীচে নেমেছি।’’ মেয়েদের বাঁচাতে গিয়ে পায়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন মমতা।
মমতার মতোই অকুতোভয় বছর সাতাশের অবিনাশ। তৃতীয় তলে একটি সংস্থায় বছরখানেক হল কাজ করেন অবিনাশ। তাঁর কথায়, ‘‘উত্তাপ ক্রমশ বাড়ছিল। ঘরে তখন ৭০-৮০ জন। নীচের তলা থেকে অনেকে উপরে উঠে এসেছে। প্রথমে আমি কাচের জানলাগুলি ভাঙতে শুরু করলাম। ঘরে থাকা টেবিল, চেয়ার দিয়ে জানলার কাচ ভাঙতেই আধ ঘণ্টা লাগল। তত ক্ষণে দমকলের ক্রেন এসে গিয়েছে। প্রথমে মহিলা ও শিশুদের নামিয়ে তার পরে একে একে বাকিদের ক্রেনে তুলে দিলাম।’’ অবিনাশ জানান, গরমে ঘরে দাঁড়ানো যাচ্ছিল না। ঘরে আর কেউ রয়েছেন কিনা তা পরীক্ষা করে দেখার পরেই নিজে ঘর ছাড়েন তিনি। একই ভাবে উদ্ধারে এগিয়ে এসেছিলেন বিনীত। ঘরের মধ্যে দগ্ধ অবস্থায় কয়েক জনকে দেখেন তিনি। বাকিরা উপর তলায় ওঠার চেষ্টা করছেন। ঠান্ডা মাথায় সকলকে বার করে আনেন তিনি। উপস্থিত বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে বাঁচিয়েছেন বহু প্রাণ।