জলের তলায় রেলপথও। রবিবার মুম্বইয়ের কুর্লায়। পিটিআই
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বানচাল করে দিয়ে এ বছর সময়ের খানিক আগেই বর্ষা ঢুকে পড়েছে মুম্বইয়ে। গত বুধবার থেকে কখনও টিপটিপ কখনও ঝমঝমিয়ে ঝরছে। তবে শনিবার থেকে একটানা বৃষ্টিতে একেবারে নাজেহাল বাণিজ্যনগরী। রবিবার সকাল পর্যন্ত নাগাড়ে বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে শহরের বেশ কিছু অংশ। বহু এলাকায় ডুবে গিয়েছে রাস্তাঘাট, রেল লাইন। ব্যাহত হয়েছে পরিষেবা। তবে সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার ভোর রাতে। এ দিন বিখরওলী ও চেম্বুরের দু’জায়গায় দেওয়াল ধসে অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বেশ কয়েক জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মৃত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে মহারাষ্ট্র এবং কেন্দ্র সরকার। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে একে ‘ছোট আকারে মেঘ-ভাঙা বৃষ্টি’ বলেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাত ১টা নাগাদ চেম্বুরের ভাসি নাকা এলাকার একটি বসতিতে দেওয়াল ধসে ১৭ জনের মৃত্যু হয়। গুরুতর জখম সাত জনকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যে বিখরওলীতে দ্বিতীয় দুর্ঘটনাটি ঘটে। একটানা বৃষ্টিতে ঝুপড়ি ধসে মারা যান আরও ৭ জন। অন্য দিকে ভান্ডুপ এলাকায় বন দফতরের দেওয়াল ধসে ১৬ বছরের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ভোর তিনটে থেকে মাত্র তিন ঘণ্টার বৃষ্টিতে রেকর্ড ছুয়েছে। ওই সময়ে মুম্বইয়ে বৃষ্টি হয়েছে ২৫০-৩০৫ মিলিমিটার। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস। ডপলার রাডারে তোলা ছবিতে শহরের মাথায় বিপুল আকৃতির বজ্রগর্ভ মেঘের সঞ্চারণ দেখা গিয়েছে।
এ দিন সকালে একটানা বৃষ্টিতে জল জমে থমকে যায় মুম্বই ও শহরতলির রেল পরিষেবা। তিলক নগর, দাদর, পরেল, কুরলা, চুনাভাট্টি, ওয়াডালায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। ছত্রপতি শিবাজি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভোরের দিকে ঘণ্টা পাঁচেক বিমান-ওঠানামা বন্ধ রাখা হয়েছিল। ঘুরিয়ে দেওয়া হয় ৯টি বিমানের অভিমুখ। জল জমে যায় রাস্তাতে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু ছবিতে শহরের রাস্তায় গাড়ি ভাসতে দেখা গিয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টিতে উপচে গিয়েছে শহর সংলগ্ন বিহার হ্রদ।
এ দিন টুইট করে মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মুখ্যমন্ত্রী ঠাকরে মৃতদের পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। জখমদের চিকিৎসার সব ভার নিচ্ছে রাজ্য সরকার।