দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে কি এ বার থেকে মনুস্মৃতি পড়ানো হবে? আইনের কোর্সে এই প্রাচীন গ্রন্থের একাংশ যোগ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে খবর। আইনের শিক্ষকমণ্ডলীর কোর্স কমিটিতে এই প্রস্তাবের বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাঠ্যক্রমের বিষয়ে যাঁরা সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত নেন, সেই বোর্ডের কাছে আপাতত প্রস্তাবটি রাখা হয়েছে। সেখান থেকে সবুজ সঙ্কেত মিললেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের কোর্সে মনুস্মৃতি যুক্ত হয়ে যাবে।
পাঠ্যক্রমে মনুস্মৃতি যোগ করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম সমর্থিত শিক্ষক সংগঠন সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক টিচার্স ফ্রন্ট (এসডিটিএফ)। তাদের বক্তব্য, মনুস্মৃতি মহিলাদের অধিকারের বিরুদ্ধে সঙ্কীর্ণ এবং দমনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি প্রচার করে। সমাজে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকারও স্বীকার করে না। তাই আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার অঙ্গ হতে পারে না এই গ্রন্থ। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য যোগেশ সিংহের কাছে চিঠিও দিয়েছে এসডিটিএফ।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে মনুস্মৃতি পড়ানোর যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে এলএলবি কোর্সের প্রথম এবং ষষ্ঠ সেমিস্টারে মনুস্মৃতির কিছু অংশ যুক্ত করা হবে। অর্থাৎ, প্রথম বর্ষ এবং তৃতীয় বর্ষের ছাত্রছাত্রীরা তা পড়বেন। জিএন ঝা-এর ‘মনুস্মৃতি উইথ দ্য মনুভাষ্য অফ মেধাতিথি’ এবং টি কৃষ্ণস্বামী আইয়ারের ‘কমেন্টারি অফ মনুস্মৃতি— স্মৃতিচন্দ্রিকা’ পাঠ্যক্রমে যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। এই প্রস্তাবের বিষয়ে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল আলোচনা করবে।
প্রস্তাবের বিরোধিতা করে উপাচার্যকে দেওয়া চিঠিতে এসডিটিএফ বলেছে, ‘‘মনুস্মৃতির একাধিক পর্যায়ে মহিলাদের শিক্ষা এবং সমানাধিকারের বিরোধিতা করা হয়েছে। তাই এই গ্রন্থের কোনও অংশ পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করা আমাদের দেশের সংবিধানের সাধারণ কাঠামোর বিরোধী।’’ এই প্রস্তাব অবিলম্বে তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে শিক্ষক সংগঠন। তাঁদের আরও দাবি, পুরোনো পাঠ্যক্রমেই এলএলবি কোর্স চালিয়ে যাওয়া হোক। উপাচার্য যেন নতুন পাঠ্যক্রমে সায় না দেন, সেই অনুরোধ জানিয়েছেন শিক্ষকেরা।