রাজ্যসভা নিয়ে মোদীকে বার্তা মনমোহনের

রাজ্যসভায় গরিষ্ঠতা না-থাকায় গত পাঁচ বছরে মোদী সরকারকে বিভিন্ন বিল পাশ করাতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৪০
Share:

ছবি: পিটিআই।

মৃদু স্বরেও যে শাণিত আক্রমণ করা যায়, ফের বোঝালেন মনমোহন সিংহ। নরেন্দ্র মোদীর মুখে রাজ্যসভাকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা শুনে তাঁর সামনেই মনে করিয়ে দিলেন, কাজের ক্ষেত্রে সরকার তা মানছে না। ৩৭০ রদ ও জম্মু-কাশ্মীর রাজ্য ভেঙে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরির বিলের খসড়া যথেষ্ট আগে বিরোধীদের দেওয়া হয়নি। সংসদীয় কমিটিতে আলোচনাও করতে দেওয়া হয়নি। কেন্দ্রকে সতর্ক করে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্য থেকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বদলে ফেলার সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে।’’

Advertisement

মনমোহনের মতে, এমন চরম পদক্ষেপের আগে সরকারের উচিত ছিল রাজ্যসভায় আলোচনা করা। কারণ রাজ্যসভা রাজ্যগুলির সভা বা ‘কাউন্সিল অব স্টেটস’।

রাজ্যসভায় গরিষ্ঠতা না-থাকায় গত পাঁচ বছরে মোদী সরকারকে বিভিন্ন বিল পাশ করাতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে। এখন উচ্চকক্ষে গরিষ্ঠতা প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে সরকার। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যসভার ২৫০-তম অধিবেশন উপলক্ষে ‘রাজনীতিতে রাজ্যসভার ভূমিকা ও সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা’ নিয়ে আজ আলোচনা ডাকা হয়। অটলবিহারী বাজপেয়ীকে উদ্ধৃত করে মোদী বলেন, ‘‘সেকেন্ড হাউস আদৌ সেকেন্ডারি হাউস নয়।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: নির্বাচনী বন্ড নিয়ে বিতর্ক

তবে বিল আটকে রাখার প্রশ্নে নিজের মনোভাব যে বদলায়নি, তা-ও বুঝিয়ে দেন। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে এক সময়ে তিনি বলেছিলেন, লোকসভা জনগণের রায়ে নির্বাচিত। দেশবাসীর রায়কে মান্যতা দেওয়া উচিত রাজ্যসভার। আজও তিনি বললেন, রাজ্যসভার কাজ হল নজর ও ভারসাম্য রাখা (চেকস অ্যান্ড ব্যালান্সেস)। কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা ও ঝুলিয়ে রাখার মধ্যে ফারাক রয়েছে। ভারসাম্য রাখা ও আটকে দেওয়া এক নয়। পাল্টা যুক্তিতে মনমোহন মনে করান, ‘‘সংখ্যগরিষ্ঠতার দাপট বেশি হলে রাজ্যসভার ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। আবেগ ও তাড়াহুড়োয় যাতে বিল পাশ না-হয়, তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।’’

মনমোহনের অভিযোগ, মোদী সরকার অর্থ বিলের ‘অপব্যবহার’ করে রাজ্যসভাকে ‘বাইপাস’ করার চেষ্টা করেছে। কারণ অর্থ বিল রাজ্যসভা সংশোধন করতে বা আটকাতে পারে না। রাজ্যসভার সংসদীয় কমিটিতে আলোচনাও হতে দিচ্ছে না এই সরকার। মোদী জমানার প্রথম পাঁচ বছরে ২৫% বিল সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। যেখানে প্রথম ও দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের আমলে ৬০% ও ৭১% বিল পাঠানো হয়েছিল। মনমোহনের সুপারিশ, রাজ্যসভায় প্রতি বছর কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা হওয়া জরুরি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement