—প্রতীকী চিত্র।
কুকিদের গণকবরের পরিকল্পনা ঘিরে ফের সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে মণিপুরের চূড়াচাঁদপুর ও বিষ্ণুপুর জেলায়। কুকিদের যৌথ মঞ্চ আইটিএলএফ ঘোষণা করেছে, তুইবুয়ং এলাকায় টুইবংয়ে সংঘর্ষে নিহত কুকিদের মৃতদেহ মর্গ থেকে বার করে বৃহস্পতিবার গণকবর দেওয়া হবে। কিন্তু মেইতেইদের যৌথ মঞ্চ কোকোমি ও অন্যান্য মণিপুরি সংগঠন জানিয়ে দিল, তারা কিছুতেই বিষ্ণুপুর জেলার মেইতেই এলাকা তোরবুং বাংলায় ‘চিন-কুকি মাদক সন্ত্রাসবাদীদের’ দেহ কবর দিতে দেবে না। আজ থেকেই দলে দলে মহিলা ওই এলাকার দিকে রওনা হয়েছেন।
কোকোমি আজ ইম্ফলে এ নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে। তাদের দাবি, মেইতেইদের বিতাড়িত করে কুকিরা ওই এলাকা দখল করে নিয়েছে। তাই সেখানকার মৌমাছি পালন কেন্দ্রে কুকিদের গণকবর দেওয়া কোনও ভাবেই মানা হবে না। মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহের উপরেও চাপ বাড়ছে। যা পরিস্থিতি, তাতে রাজ্য সরকার তোরবুংয়ে কবর দেওয়ার অনুমতি না-ও দিতে পারে। কিন্তু সরকার অনুমতি না দিলে কুকিরা আবার ক্ষিপ্ত হবে। এলাকায় প্রচুর নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। কাছেই আসাম রাইফেলসের ৩৬ নম্বর ব্যাটেলিয়নের প্রধান শিবির। আইটিএলএফ জানায়, লামকা (কুকিদের দেওয়া চূড়াচাঁদপুরের নতুন নাম) হাসপাতালের মর্গে ৩৫ জনের মৃতদেহ রয়েছে। রাজ্য সরকার ইম্ফল থেকে আরও দেহ পাঠালে সেগুলিও একই জায়গায় কবর দেওয়া হবে। নিহতদের মধ্যে এক ইহুদি, দু’জন মেসাইয়ানিক ইহুদি এবং বাকিরা খ্রিস্টান।
কোকোমির বক্তব্য, কুকিরা তাদের এলাকার কবরখানায় বা চূড়াচাঁদপুর জেলায় যেখানে ইচ্ছে দেহগুলি কবর দিতে পারে। কিন্তু উত্তেজনা বাড়াতে, দখল করা হিন্দু মেইতেইদের এলাকায় গণকবর দেওয়া কোনও ভাবেই মানা হবে না। মণিপুর উইমেন কনভেনশনও হুঁশিয়ারি দিয়েছে, তোরবুংয়ে গণ-কবর দেওয়া চলবে না। তেমন চেষ্টা হলে মেইতেই মহিলারাও হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন না।
বিজেপির কুকি বিধায়ক পাওলিয়েনলাল হাওকিপ মণিপুরের সংঘর্ষের জন্য রাজ্য সরকারকে বরাবর দায়ী করছেন। সম্প্রতি তিনি বলেন, রাজ্যে মেইতেই, কুকি ও নাগাদের জন্য তিনটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন হলে তবেই শান্তি ফেরা সম্ভব। মণিপুরের কংগ্রেস এ দিন বলে, দিনের পর দিন মণিপুর ভাগ, বিজেপির বিরুদ্ধে মন্তব্য এবং খোদ প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করার পরেও দলের হাওকিপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়াটা বিস্ময়কর।
সুপ্রিম কোর্ট ও দিল্লি হাই কোর্টে মণিপুর সংক্রান্ত যাবতীয় মামলায় সিবিআইয়ের প্রাক্তন মুখ্য আইনজীবী কে রাঘবচারিলু তাদের হয়ে সওয়াল করবেন বলে বুধবার মণিপুর সরকার জানিয়েছে। এ দিকে, কাল থেকে
শুরু হবে মায়ানমার থেকে মিজ়োরামে আসা শরণার্থীদের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ। মিজ়োরামে এখন ৩৫,১২৬ জন মায়ানমারের নাগরিক শরণার্থী হিসেবে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৫,৫৮৯ জন আছেন ১৬২টি আশ্রয় শিবিরে। বাকিরা বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আছেন।