—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
রাজ্যের অশান্ত পরিস্থিতির অজুহাতে অফিসে না এলে সরকারি কর্মীদের বেতন কাটা পড়বে। সোমবার এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করল মণিপুর সরকার।
মণিপুরে প্রায় ১ লক্ষ সরকারি কর্মী রয়েছেন। এন বীরেন সিংহ সরকারের ঘোষণা, তাঁদের মধ্যে কেউ রাজ্যের সাম্প্রতিক হিংসার জন্য অফিস কামাই করেছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। সেই কর্মীদের সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য জানাতে নির্দেশ দিয়েছে জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট (গ্যাড)।
সোমবার রাতে বিজ্ঞপ্তি জারি করে গ্যাড-সচিব মাইকেল আচম জানিয়েছেন, ১২ জুন মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, যে সমস্ত সরকারি কর্মী জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্টের থেকে বেতন পান, তাঁদের বিরুদ্ধে অনুমোদিত ছুটি ছাড়া ‘নো ওয়ার্ক নো পে’ নীতি বলবৎ হবে।
এ ধরনের কর্মীদের নাম-ঠিকানা ছাড়াও তাঁরা কোন পদে কর্মরত এবং ‘এমপ্লয়ি আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার’ (ইআইএন)— এই সমস্ত তথ্য ২৮ জুনের মধ্যে জানানোর জন্য রাজ্যের প্রশাসনিক সচিবদের নির্দেশ দিয়েছেন গ্যাড-সচিব।
প্রসঙ্গত, গত ৩ মে মণিপুরের জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর বিক্ষোভ-মিছিল ঘিরে উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে।
মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষ ঠেকাতে গত ৬ মে মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। নামানো হয় সেনা এবং অসম রাইফেলস বাহিনীকে। সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকির ভার দেওয়া হয়েছে সিআরপিএফের প্রাক্তন প্রধান কুলদীপ সিংহকে। তাঁর অধীনে এডিজিপি (ইন্টেলিজেন্স) আশুতোষ সিংহ সমগ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার ‘অপারেশনাল কমান্ডার’ হিসেবে কাজ শুরু করেন। কিন্তু তাতেও তেমন ফল মেলেনি।