মণিপুর হাই কোর্ট। ছবি: সংগৃহীত।
মণিপুরে মেইতেইদের জনজাতিকরণ সংক্রান্ত হাই কোর্টের যে নির্দেশকে ঘিরে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের সূত্রপাত সেই মামলা নিয়েই রিভিউ পিটিশন গ্রহণ করল মণিপুর হাই কোর্ট। আগের নির্দেশে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এম ভি মুরলীধরণ মেইতেইদের জনজাতিকরণ নিয়ে কেন্দ্রকে সুপারিশ পাঠাতে বলেছিলেন। সঙ্গে বলা হয়েছিল, সরকার যেন চার সপ্তাহের মধ্যে মেইতেইদের নাম তফসিলি জনজাতির তালিকাভুক্ত করার ব্যবস্থা নেয়।
সেই রায়ের বিরুদ্ধে এখন সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, এই ধরনের নির্দেশ দেওয়ার এক্তিয়ার হাই কোর্টের নেই। এ বার হাই কোর্টের আগের রায় পুনর্বিবেচনা করার আবেদন জানাল ‘মেইতেই ট্রাইবস্ ইউনিয়ন’। তাদের আইনজীবী জানান, সুপ্রিম কোর্ট বলেছে এসটি তালিকায় নাম ঢোকানোর অধিকার শুধু সংসদ বা রাষ্ট্রপতির রয়েছে। তাই আগের নির্দেশের ওই অংশের পরিমার্জন চাওয়া হয়েছে। এ নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মত চেয়ে নোটিস পাঠালেন বিচারপতি মুরলীধরণ। পরের শুনানি ৫ জুলাই।
অন্য দিকে মণিপুরে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার বিরুদ্ধে জমা পড়া বিভিন্ন জনস্বার্থ মামলার ভিত্তিতে মণিপুর হাই কোর্ট রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিল অন্তত কয়েকটি নির্দিষ্ট স্থানে সরকারি তত্ত্বাবধানে সীমিত ভাবে হলেও ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা হোক। হাই কোর্ট সব মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার কাছেও জানতে চেয়েছে সামাজিক মাধ্যম ব্লক করে ও সরকারের আশঙ্কা অনুযায়ী গুজব ছড়ানোর রাস্তা আটকে শুধু কাজের জন্য ইন্টারনেটের ব্যবহার চালু করা সম্ভব কী না? অবশ্য আজই সরকার ফের ইন্টারনেটে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়ে ২৫ জুন করেছে।
রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবিও থামছে না। মণিপুরের ৯ জন মেইতেই বিজেপি বিধায়ক প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিয়ে জানান, রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা একেবারে ভেঙে পড়েছে। তাই রাজ্যে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা আশু প্রয়োজন। স্মারকপত্রে রাজ্যে আরও সুচারু ভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ করা, কড়া হাতে অনুপ্রবেশ দমন করা, সংঘর্ষবিরতিতে থাকা কুকি জঙ্গি সংগঠনগুলির উপরে কড়া নজর রাখার কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, যেন কোনও ভাবেই রাজ্যে পৃথক প্রশাসনের দাবি না মানা হয়। প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, কুকি ও মেইতেই বিধায়কদের একত্রে বসিয়ে সমাধানসূত্র বের করা হোক।
পাশাপাশি স্পিকার টি সত্যব্রত সিংহের নেতৃত্বে মণিপুরের মন্ত্রী-বিধায়কদের ২৩ জনের দল প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দেখা করে কুকি জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি অবিলম্বে ভঙ্গ করার দাবি জানান। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গেও দেখা করেন তাঁরা।
মঙ্গলবার সকালে আধাসেনা থৌবাল জেলায় একটি এসইউভি থামিয়ে তল্লাশি চালানোর সময় গাড়ি থেকে ৫১ মিলিমিটার বোরের মর্টার উদ্ধার করে। ধরা হয় চার আরোহীকে। তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার পরে উত্তেজিত জনতা থানা ঘেরাও করে ধৃতদের মুক্তির দাবি তোলে। বিভিন্ন স্থানে পথ অবরোধ শুরু হয়।