তপ্ত মণিপুরে বাহিনীর টহলদারি। —ফাইল চিত্র।
মণিপুরের সেনাছাউনি থেকে কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে সম্প্রতি নিখোঁজ হয়ে যান ঠিকাদার সংস্থার এক কর্মী। ওই ঘটনায় এ বার তদন্ত শুরু করল মণিপুর হাই কোর্ট গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি। গত ২৫ নভেম্বর তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। পরের দিন সেনার তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। ঠিকাদার সংস্থার ওই কর্মীর পরিবারের থেকে তারা জানতে পারেন, ওই ব্যক্তি বাড়ি ফেরেননি। এর পরেই সেনার তরফে খোঁজ শুরু হয়। কিন্তু তাঁকে এখনও পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। ওই ঘটনায় মণিপুর হাই কোর্ট ৩ ডিসেম্বর একটি কমিটি গঠন করে। ওই ব্যক্তির রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে হাই কোর্ট নিযুক্ত কমিটি।
নিখোঁজ ব্যক্তির নাম লইশরাম কমল বাবু। বছর ছাপ্পান্নের ঠিকাদার কর্মী অসমের বাসিন্দা। তিনি এক ঠিকাদার সংস্থার হয়ে মণিপুরের কাংপোকপি জেলার লেমাখঙে সেনাছাউনিতে কাজ করছিলেন। কুকি জনজাতি অধ্যুষিত ওই জেলা থেকে বাড়ি ফেরার পথে ২৫ নভেম্বর নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। তিনি কোথায় রয়েছেন, সে ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোনও তথ্য নেই। এই আবহে কাংপোকপির জেলাশাসক মহেশ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মনোজ প্রভাকরকে নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে মণিপুর হাই কোর্ট। সেনার ৫৭ মাউন্টেন ডিভিশনের মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক (সিএসও) এবং ইম্ফল পশ্চিমের পুলিশ সুপারকেও রাখা হয় ওই কমিটিতে। হাই কোর্ট গঠিত কমিটির সদস্যেরা শুক্রবার ওই সেনাছাউনি পরিদর্শন করেন। পরে ঠিকাদার সংস্থার নিখোঁজ কর্মীর পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেন তাঁরা। তবে নিখোঁজ হওয়ার ১৩ দিনের মাথাতেও কোনও খোঁজ নেই ওই ব্যক্তির।
লইশরামের পরিবার আদালতে জানিয়েছিল, কুকি জনজাতির সশস্ত্র গোষ্ঠী তাঁকে অপহরণ করে নিয়েছে। ওই মামলায় হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, কমিটিকে প্রয়োজনীয় সব রকম তথ্য দিয়ে সাহায্য করবেন নিখোঁজ ব্যক্তির পরিবার। মণিপুরের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেনাছাউনিতে কর্মরত ঠিকাদার সংস্থার কর্মীর নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনা নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ওই ব্যক্তি অসমের বাসিন্দা হওয়ায়, এই পরিস্থিতির আঁচ গিয়ে পড়েছে অসমেও। গত বছরের মে মাস থেকে মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা ঘিরে উত্তপ্ত মণিপুর। এ পর্যন্ত ২৫০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গৃহহীন হয়েছেন আরও বহু মানুষ। এই তপ্ত পরিস্থিতিতে শনিবারও মণিপুরের থৌবল জেলা থেকে অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। মিলেছে গ্রেনেডও।