মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। — ফাইল চিত্র।
অশান্ত মণিপুর। সেপ্টেম্বরের গোড়া থেকেই রক্ত ঝরছে উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্যে। মণিপুরে শান্তি ফেরাতে এ বার রাজ্য সরকারের হাতে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেওয়ার দাবি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। সব বিধায়ককে নিয়ে রাজ্যপাল লক্ষ্মণ আচার্যের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। সূত্রের খবর, সেখানেই এই দাবি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, মণিপুরে বিজেপি শাসিত সরকার। সেই সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন। অনেকের মতে, কেন্দ্রের উপর ভরসা রাখতে পারছে না মণিপুর সরকার।
গত বছর মে মাস থেকে উত্তপ্ত মণিপুর। শান্তি ফেরাতে বার বার পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বর্তমানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নেতৃত্বাধীন নিরাপত্তা বাহিনী মণিপুরে শান্তি ফেরানো দায়িত্বে আছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী চান, রাজ্যের হাতে দায়িত্ব দেওয়া হোক। রবিবার বীরেন শাসক জোটের সব দলের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। তার পর বিধায়কদের নিয়ে রাজভবনে যান। সেখানেই রাজ্যপালের কাছে কিছু দাবি জানান।
প্রথমে ড্রোন হামলা। তার পর ক্ষেপণাস্ত্র হানা। গত এক সপ্তাহে মণিপুরে জঙ্গিদের এই জোড়া নাশকতা ঘুম কেড়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর। এই পরিস্থিতিতে শনিবার থেকে সম্ভাব্য জঙ্গি ডেরার সন্ধানে চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছে মণিপুর পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী। ধ্বংস করা হয়েছে জঙ্গিদের তিনটি বাঙ্কার।
মেইতেইরা দাবি করছে কুকিরাই ওই ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। পুলিশের দাবি, স্থানীয় ভাবে তৈরি হলেও উন্নত প্রযুক্তির ওই ক্ষেপণাস্ত্র ৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে আঘাত হানতে পারে। কুকিরা অবশ্য কয়েকটি ভিডিয়ো প্রকাশ করে পাল্টা দাবি করে, মেইতেই সশস্ত্র বাহিনী আরাম্বাই টেঙ্গলের যোদ্ধাদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে মেইতেই এলাকায় আছড়ে পড়ে ওই ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনার পর থেকেই নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়েছে মণিপুরে। মণিপুরের মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের পরিস্থিতিতে নতুন করে তপ্ত হয়ে ওঠে সম্প্রতি কংপোকপি এবং পশ্চিম ইম্ফলের দু’টি জায়গায় ড্রোন হামলাকে কেন্দ্র করে। দু’টি হামলাই হয়েছিল মেইতেই জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকায়। সেপ্টেম্বর মাসে এখনও পর্যন্ত অন্তত আট জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় মণিপুরের শাসকদলের সব বিধায়ককে নিয়ে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন। এর পর রাতেই রাজ্যপাল লক্ষ্মণ আচার্যের সঙ্গে দেখা করতে রাজভবনে যান বীরেন।