পানীয় জল আনতে গিয়ে কাদায় আটকে বৃদ্ধ। ছবি: সংগৃহীত।
সুকুমার রায়ের ‘অবাক জলপান’-এর ‘একটু জল পাই কোথায় বলতে পারবেন?’ সংলাপ হয়তো অজান্তেই আওড়ান এখানকার মানুষ। পানীয় জলের জন্য সে কী নাকানিচোবানি! জলের অপর নাম জীবন। সেই জল সংগ্রহ করতে গিয়ে জীবনটাই যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল বৃদ্ধের। সমাজমাধ্যমে ধরা পড়ল এমনই এক শিউরে ওঠা দৃশ্য। কোমর পর্যন্ত কাদায় নেমে পানীয় জল নিতে নেমেছিলেন এক বৃদ্ধ। কিন্তু কাদায় আটকে গেলেন তিনি। খবর পেয়ে ছুটে আসতে হল প্রশাসনিক কর্মীদের। তার পর বহু কষ্টে হামাগুড়ি দিয়ে কাদা মেখে ওঠার চেষ্টা করলেন বৃদ্ধ। এক ব্যক্তির বাড়িয়ে দেওয়া লাঠি ধরে কোনও মতে উঠে এসেছেন তিনি। কিন্তু এত কষ্টের মাঝেও এক হাতে থাকা কলসিটা হাতছাড়া করেননি।ওই জলের জন্যই তো এত কষ্ট! দৃশ্যটি উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের হামিরপুরের। এ দিকে এই গোটা ঘটনা যখন কেউ এক জন ক্যামেরাবন্দি করছেন, তখন এক জন পুলিশকর্মীকে দেখা গিয়েছে হাসিমাখা মুখে গোটা ঘটনার ভিডিয়ো করছেন তিনি।
কাদামাখা ওই বৃদ্ধকে দেখে ওই পুলিশকর্মীর মতো হয়তো অনেকের হাসি পেয়েছে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের হামিরপুর জেলার সিসোলার থানার বাচাকাহানি গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে এটা মোটেই মজার নয়। পানীয় জলের জন্য এই ‘সংঘর্ষ’ তো তাঁদের নিত্যদিনের। রবিবার ঝড়ের গতিতে ওই বৃদ্ধের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে। প্রশ্ন উঠছে সরকারের ভূমিকা নিয়ে। আবার হাসিমুখে দাঁড়িয়ে থাকা ওই পুলিশকর্মীরও সমালোচনা করেছেন কেউ কেউ।
হামিরপুর জেলার সিসোলার থানার বাচাকাহানি গ্রামের বাসিন্দাদের পানীয় জলের একমাত্র উৎস কেন নদী। স্থানীয়রা বলছেন, সেখানকার পানীয় জল এতটাই নোনা যে বাধ্য হয়ে নদী থেকে জল সংগ্রহ করেন। জল আনতে গিয়ে ওই বৃদ্ধের মতোই কেউ কেউ সমস্যার মুখোমুখি হন। এই সমস্যার কথা সরকারেরও অজানা নয়। কিছু দিন আগেই রাজ্যের জলশক্তি মন্ত্রী এলাকা পরিদর্শন করে গিয়েছেন। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন শীঘ্রই নলকূপের জল পাবেন এলাকাবাসী। যত দিন সেই নলকূপ না আসছে এ ভাবেই জল আনতে হবে তাঁদের। সংবাদমাধ্যমকে জানান নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা।