—ফাইল চিত্র।
দিল্লির যে তিহাড় জেলে থাকে সাজাপ্রাপ্ত কুখ্যাত অপরাধীরা, সেখানেই এ বার ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ড ঘটে গেল। ধাতব পাত দিয়ে কুপিয়ে সেখানে এক বন্দি অন্য বন্দিকে খুন করেছে। সেই খুনের তদন্তে নেমে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেল পুলিশ। জানা গেল, ছ’বছর আগে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে জেলে এসেছিল নিহত বন্দি। হত্যাকারী সেই কিশোরীর দাদা। বোনের ধর্ষণের বদলা নিতে খুন করে জেলে ঢোকে সে।
সোমবার সকালে তিহাড় জেলের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তি নাম মহম্মদ মেহতাব (২৭)। তাকে কুপিয়ে খুন করেছে ২১ বছরের জাকির।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মেহতাব আদতে নিজামুদ্দিনের বাসিন্দা। দক্ষিণপুরীর বাসিন্দা জাকির। দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিনের পরিচয়। সেই সূত্রে জাকিরদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল মেহতাবের। কিন্তু ২০১৪ সালে জাকিরের কিশোরী বোনকে ধর্ষণ করে সে। তার জেরে আত্মঘাতী হয় ওই কিশোরী।
সেই ঘটনায় ২০১৪-তেই সাজা হয়ে যায় মেহতাবের। সেই থেকে তিহাড়ে বন্দি ছিল সে। কিন্তু বোনের ধর্ষকের প্রতি রাগ মেটেনি জাকিরের। প্রতিশোধের নেশায় ২০১৮-য় খুন করে পরিকল্পনামাফিক তিহাড়ে ঢোকে সে। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় সেইসময় জেলের অন্য বিভাগে রাখা হয় তাকে। সেই থেকে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার অপেক্ষা করছিল জাকির। এ বছর ২১-এ পা দিতেই ৫ নম্বর ওয়ার্ডে সরিয়ে আনা হয় তাকে।
আরও পড়ুন: ‘এলএসি পেরিয়ে বেজিং যাবার ইচ্ছে? গাড়ি ঘোরান!’
কিন্তু মেহতাবের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে জায়গা পেতে জেলের অন্য বন্দিদের সঙ্গে ইচ্ছাকৃত ভাবে ঝামেলা বাধাতে থাকে সে। কয়েক জনের সঙ্গে হাতাহাতিও বেধে যায় তার। তাকে ৮ নম্বর জেলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য জেল কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানায় জাকির। সেই মতো কিছু দিন আগে তাকে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে সরিয়ে আনা হয়। সেই থেকে তক্কে তক্কে ছিল সে। মেহতাবের উপর নজর রাখতেও শুরু করে সে।
সোমবার সকালে প্রার্থনায় যোগ দেওয়ার ডাক পড়লে দলে দলে কুঠুরি ছেড়ে বেরোতে শুরু করে বন্দিরা। সেই সুযোগে মেহতাবের কুঠুরিতে চলে আসে জাকির। সেখানে তাকে একা পেয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে জাকির। একটি ধারাল ধাতব পাত দিয়ে মেহতাবকে এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করে। তার জেরে মেহতাবের ঘাড়ে, গলায়, পেটে এবং শরীরের একাধিক জায়গায় গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: সমাধান অধরা, স্থলে-আকাশে সমানে টক্কর দিতে প্রস্তুতি বাড়াছে ভারত
মেহতাবের চিৎকার শুনে ওই কুঠুরিতে ছুটে আসেন পুলিশকর্মীরা। জাকিরকে নিরস্ত করে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তড়িঘড়ি দীনদয়াল উপাধ্যায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় মেহতাবকে। কিন্তু সেখানে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এই ঘটনায় হরি নগর থানায় জাকিরের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের হয়েছে। জেরায় অপরাধ স্বীকার করে সে। বোনের ধর্ষণের প্রতিশোধ নিতেই মেহতাবকে খুন করে বলে জানায়।