Rape

ধর্ষণে অভিযুক্ত ছেলেকে বাঁচাতে তাঁকে ‘মেরে’ ফেললেন বাবা, সাজিয়ে ফেললেন চিতাও!

ঘটনা ২০১৮ সালের। স্থান বিহারের ভাগলপুর। স্কুলের এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল নীরজ মোদী নামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

পটনা শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২২ ১১:৫৫
Share:

ধর্ষণে অভিযুক্ত ছেলেকে চিতায় তুলেছেন বাবা। (বাঁ দিকে) অভিযুক্ত শিক্ষক।

ধর্ষণে অভিযুক্ত ছেলেকে শাস্তির হাত থেকে বাঁচাতে তাঁকে ‘মেরে’ চিতায় তুললেন বাবা। প্রমাণ হিসাবে আবার সেই ছবি থানাতে জমাও দিয়ে আসেন তিনি। কিন্তু এর নেপথ্যে যে অন্য কাহিনি রয়েছে, তা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি পুলিশ থেকে আদালত। কী সেই কাহিনি?

Advertisement

ঘটনা ২০১৮ সালের। স্থান বিহারের ভাগলপুর। স্কুলের এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল নীরজ মোদী নামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলাও রুজু হয়। মামলা দায়ের হতেই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আত্মগোপন করেন নীরজ। পুলিশ যখন খুঁজে খুঁজে হয়রান, নীরজের বাবা রাজারাম মোদী ছেলের মৃত্যুর প্রমাণ নিয়ে পুলিশের কাছে হাজির হন। সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন মৃত্যুর শংসাপত্র এবং চিতায় সাজানো ছেলের ছবি।

মামলাটি আদালতে ওঠে। আদালতও সেই ছবি এবং শংসাপত্র দেখে বিষয়টি বিশ্বাস করে এবং মামলাটি বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। ফলে ২০১৮ সালেই বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়। কিন্তু এর নেপথ্যে যে কাহিনি উঠে এসেছে, তা জানতে পেরে পুলিশ থেকে আদালত সকলেই চমকে গিয়েছে।

Advertisement

অভিযুক্ত কি আদৌ মারা গিয়েছেন, সন্দেহ হয় নাবালিকার মায়ের। তিনি নিজেও খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন। আর তাতেই প্রকাশ্যে আসে পুরোটাই নাটক। সাজানো ঘটনা। অভিযুক্তের মৃত্যু হয়নি। তিনি বহাল তবিয়তে রয়েছেন। তার পরই নাবালিকার মা ফের পুলিশ এবং প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। আর এখান থেকেই ঘটনার মোড় নেয়। যা জানতে পেরে হতভম্ব হয়ে গিয়েছে পুলিশ থেকে আদালত।

পুলিশ জানতে পারে, ছেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠতেই তাঁকে ‘মেরে’ ফেলার পরিকল্পনা করেন বাবা রাজারাম। শাস্তির হাত থেকে বাঁচাতে ছেলেকে চিতায় শোয়ান তিনি। তার পর সেই ছবি তোলেন। তার পর চিতার জন্য কাঠের খরচের একটি ভুয়ো রসিদও বানান। সেই রসিদের মাধ্যমে বিডিও অফিস থেকে মৃত্যুর ভুয়ো শংসাপত্র বানান। তার পর সেই ছবি এবং শংসাপত্র নিয়ে সরাসরি হাজির হন থানায়। পুলিশকে বিভ্রান্ত করার জন্য সেই ছবি এবং শংসাপত্র দেখিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, ছেলের মৃত্যু হয়েছে। মামলাটি যে হেতু চলছিল, তাই সেই ছবি এবং শংসাপত্র আদালতেও পাঠানো হয়। আদালতও বিভ্রান্ত হয়ে মামলাটি বন্ধ করার নির্দেশ দেয়।

কিন্তু নাবালিকার মা চুপ করে বসে থাকেননি। গোটা বিষয়টি যে সাজানো তা আঁচ পেয়েই তিনি বিডিওর কাছে যান। তাঁকে জানান, অভিযুক্তের বাবা মৃত্যুর ভুয়ো শংসাপত্র বানিয়েছেন বিডিও অফিস থেকে। এর পরই বিডিও ফের মামলা নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তখনই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। গত ২১ মে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর বাবা এবং ছেলের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা রুজু হয়। সে দিনই অভিযুক্তের বাবা রাজারামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু এই ঘটনার পরেও পলাতক ছিলেন অভিযুক্ত নীরজ। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। শেষমেশ ১৭ অক্টোবর, সোমবার পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। গ্রেফতার করা হয়েছে নীরজকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement