ভারতে বানানো করোনার প্রথম টিকা কোভ্যাক্সিন— ফাইল চিত্র।
ভারতে তৈরি করোনার টিকা কোভ্যাক্সিনের প্রথম মানবদেহে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হল শুক্রবার। দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এমস)-এ আজ বছর ত্রিশের এক স্বেচ্ছাসেবকের দেহে করোনার টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হয়। এমসের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক তথা করোনা টিকার হিউম্যান ট্রায়ালের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক সঞ্জয় রায় বলেন, ‘‘আজ দুপুর দেড়টায় ইন্ট্রামাসকুলার ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ওই স্বেচ্ছাসেবকের দেহে ০.৫ মিলিগ্রাম কোভ্যাক্সিন পরীক্ষামূলক ভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। আগামী সাত দিন ওই স্বেচ্ছাসেবককে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।’’
এমসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, শনিবার ফের কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবকের দেহে কোভ্যাক্সিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হতে পারে। ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই)-র তরফে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে হিউম্যান ট্রায়ালের অনুমোদন দেওয়ার পরেই স্বেচ্ছাসেবক চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছিল। এ পর্যন্ত প্রায় ৩,৫০০ জন নিজেদের দেহে কোভ্যাক্সিন প্রয়োগের জন্য নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন। গত শনিবার এমসের ‘এথিকস কমিটি’ মোট ১০০ জনের দেহে করোনার টিকা প্রয়োগের ছাড়পত্র দিয়েছে। এঁদের মধ্যে ২২ জনের দেহে প্রথম পর্যায়ে (ফেজ ওয়ান) কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে।
সঞ্জয় এদিন বলেন, ‘‘আমরা অনেক ঝাড়াই বাছাই করেই প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষার জন্য স্বেচ্ছাসেবকদের নির্বাচন করেছি। সুস্থতা এবং শারীরিক সক্ষমতার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এথিকস কমিটির অনুমোদনের ভিত্তিতেই প্রথম পর্যায়ে করোনা টিকার পরীক্ষার জন্য স্বেচ্ছাসেবকদের বেছে নেওয়া হয়েছে।’’ এমস সূত্রের খবর, ডায়াবেটিস, রক্তচাপ, হৃদযন্ত্র, যকৃৎ, কিডনি, ফুসফুস-সহ প্রায় ৫০ দফা পরীক্ষার পরে স্বেচ্ছাসেবকদের নির্বাচন করা হয়েছে। তাঁদের দেহে কো-মর্বিডিটি সংক্রান্ত সমস্যা আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পম্পেয়োর সঙ্গে পিঁপড়ের তুলনা চিনের, বন্ধ করা হল মার্কিন কনসুলেট
দুই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা, ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি (এনআইভি)-র সহায়তায় কোভ্যাক্সিন তৈরি করেছে হায়দরাবাদের সংস্থা ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড (বিবিআইএল)। ডিসিজিআই-এর তরফে কোভ্যাক্সিনের হিউম্যান ট্রায়ালের জন্য দেশের মোট ১২টি প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রথম দফায় টিকা প্রয়োগ করা হবে ৩৭৫ জনের উপর। দ্বিতীয় দফায় অন্তত আরও ৬২৫ জন স্বেচ্ছাসেবকের দেহে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করা হবে। এমসে কোভ্যাক্সিনের পরীক্ষার জন্য দিল্লির ‘ডক্টর ডাংস ল্যাব’-এর সহযোগিতা নিচ্ছে ভারত বায়োটেক।
আরও পড়ুন: দিল্লি-মুম্বই-আমদাবাদে কমছে সংক্রমণ, দাবি এমস ডিরেক্টরের, কলকাতা নিয়ে উদ্বেগ