এখানেই গুলি করা হয় তরুণীর বাবাকে। ছবি: সংগৃহীত।
এক তরুণীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন। জামিন পেয়েই নির্যাতিতা তরুণীর বাবাকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠল সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশের হাথরসে।
২০১৮ সালে গৌরব শর্মা নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে হাথরসের এক তরুণীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল। সেই অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। মাসখানেক জেল খাটার পর জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে একটা টানাপড়েন চলছিল দীর্ঘ দিন ধরেই। সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ স্থানীয় একটি মন্দিরের সামনে দুই পরিবারের মধ্যে বচসা শুরু হয়। সেই বচসা চরম পর্যায়ে ওঠে। অভিযোগ, তখনই গৌরব তরুণীর বাবাকে গুলি করেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় তাঁর।
হাথরস জেলার পুলিশের শীর্ষ আধিকারিক বিনীত জয়সওয়াল জানিয়েছেন, তরুণীর বাবা গৌরবের বিরুদ্ধে তাঁর মেয়েকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ২০১৮ সালে। গৌরব জামিনে ছাড়াও পেয়ে যান। তার পর থেকেই দুই পরিবারের মধ্যে শত্রুতার আবহ তৈরি হয়েছিল। গৌরবও তক্কে তক্কে ছিলেন। সোমবার অভিযুক্তের স্ত্রী এবং কাকিমা স্থানীয় একটি মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন। সেখানেই ঝামেলার সূত্রপাত হয়। তখন গৌরবের পরিবারের বেশ কিছু সদস্য তাঁকে ডেকে নিয়ে আসেন। অভিযোগ, তার পরই তরুণীর বাবাকে লক্ষ্য করে গুলি চালান গৌরব।
এই ঘটনায় গৌরবের পরিবারের এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গৌরব এবং বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে পুলিশের ওই শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন।
সংবাদমাধ্যমে তরুণী বলেন, “গৌরব আমাকে যৌন হেনস্থা করেছিল। এ বার বাবাকে গুলি করে খুন করল। আমাদের গ্রামে এসেছিল ওরা। ৬-৭ জন ছিল। কারও সঙ্গে শত্রুতা ছিল না বাবার। গৌরব বাবাকে গুলি করেছে। আমি এর বিচার চাই।”
এর আগে একাধিক যৌন নির্যাতনের ঘটনায় উঠে এসেছে হাথরসের নাম। তার মধ্যে ২০ বছরের দলিত তরুণীকে ধর্ষণ করে প্রবল অত্য়াচার করা হয়। পরে তিনি হাসপাতালে নিহত হন। এই ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল দেশ। শুধু তাই নয়, সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছিল এই খবর। রাজধানী দিল্লি থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় শিউরে উঠেছিল গোটা দেশ।
হাথরস নিয়ে বিস্তর বিতর্ক তাড়া করেছিল যোগী প্রশাসনকে। অভিযোগ করা হয়েছিল, পুলিশ মধ্যরাতে পরিবারের অনুমতি না নিয়েই শেষকৃত্য করে দিয়েছে। তাই নিয়ে সারা দেশের মানুষ ক্ষেপে উঠেছিলেন। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, পরিবারের অনুমতি নিয়েই এই শেষকৃত্য করা হয়েছে।