অভিযুক্ত যুবক (সাদা জামা পরা) মনবীর। ছবি: সংগৃহীত।
ন’বছর আগে এক তরুণীকে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগেই প্রতিবেশী প্রৌঢ় ওই যুবককে জুতোর মালা পরিয়ে বাকিদের সহযোগিতায় গ্রামছাড়া করেছিলেন। ন’বছর পর গ্রামে ফিরে সেই প্রৌঢ়কে খুনের অভিযোগ উঠল ওই যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদের।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত যুবকের নাম মনবীর। ঘনশ্যাম সাইনি নামে প্রতিবেশী এক প্রৌঢ়কে খুনের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। ঘনশ্যামের ভাইঝিকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল মনবীরের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তাঁকে মারধর করে জুতোর মালা পরিয়ে গ্রামে ঘোরানো হয়। তার পর গ্রাম ছাড়তে বাধ্য করা হয়। যদিও মনবীরের দাবি, মিথ্যা অভিযোগে তাঁকে ফাঁসিয়েছিলেন ঘনশ্যাম।
জেরায় পুলিশের কাছে মনবীর দাবি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর বাড়ি থেকেই বার হওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। লজ্জায় কাউকে মুখ দেখাতে পারছিলেন না। বাইরে বার হলেই গ্রামবাসীরা তাঁর উদ্দেশে নানা কটু মন্তব্য করতেন। লাগাতার অপমানিত হয়ে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হন মনবীর। গ্রাম ছেড়ে রাজস্থানে চলে যান। সেখানে ট্রাকচালকের কাজ শুরু করেন।
মনবীরের দাবি, খুব কম বাড়িতে আসতেন। কিন্তু যখনই আসতেন স্থানীয়েরা তাঁকে নানা ভাবে অপমান করতেন। শুধু তা-ই নয়, ঘনশ্যামও সকলকে ডেকে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে শোনাতেন। আর সেই অভিযোগের কারণে তাঁর বিয়েতেও সমস্যা হচ্ছিল। বার বার অপমানিত হয়ে ঘনশ্যামের বিরুদ্ধে প্রতিশোধস্পৃহা জাগে তাঁর মনে। গত ১৬ অক্টোবর গ্রামে ফেরেন মনবীর। ওই দিন মাঠে একা কাজ করছিলেন ঘনশ্যাম। পুলিশের কাছে মনবীর দাবে করেন, ‘‘ছুরি নিয়ে ঘনশ্যামের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ি। গলায়, ঘাড়ে, মুখে একের পর এক আঘাত করি। ঘনশ্যামকে চিৎকার করারও সুযোগ দিইনি।’’ ঘনশ্যামের উপর হামলার পর এলাকা ছাড়েননি মনবীর। তাঁর দাবি, এলাকা ছাড়লেই সকলের মনে হত যে, তিনিই ঘনশ্যামের উপর হামলা করেছেন। কারও যাতে সন্দেহ না হয়, তাই এলাকাতেই এক বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। যদিও পুলিশ তাঁকে খোঁজা শুরু করতেই রাজস্থানে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে শেষরক্ষা হয়নি।