দিল্লিতে বৈঠকে মমতা যোগ দেবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ফাইল ছবি
শরদ পওয়ারের পরে এ বার ফারুক আবদুল্লাও ‘নো, থ্যাঙ্কস’ জানিয়ে দিলেন।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে শরদ পওয়ার বিরোধী শিবিরের প্রার্থী হতে রাজি না হওয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী দলের বৈঠকে গোপালকৃষ্ণ গান্ধী ও ফারুক আবদুল্লার নাম প্রস্তাব করেছিলেন। ফারুক বিবৃতি দিয়ে ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাহিবা’-কে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। কিন্তু একই সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্সের সভাপতি ফারুকের বক্তব্য, তিনি এখনও সক্রিয় রাজনীতিতে থাকতে চান। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী জোটের প্রার্থী কে হবেন, সেই নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন চিহ্ন তৈরি হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে দিল্লিতে শরদ পওয়ারের ডাকে ফের বিরোধীরা বৈঠকে বসছেন। আজ পওয়ার ই-মেল করে বিরোধী দলের নেতানেত্রীদের বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। কিন্তু পওয়ারের সেই চিঠির বয়ান তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বকে আঘাত করেছে বলে সূত্রের খবর। এর আগের বার মমতা সবাইকে বৈঠকের আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। কেন বিরোধীদের একজোট হওয়া প্রয়োজন, চিঠিতে তার উল্লেখ ছিল। ১৭টি বিরোধী দলের সেই বৈঠকে প্রার্থী চূড়ান্ত না হলেও বিরোধী দলগুলি সর্বসম্মত প্রার্থী দেবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। পওয়ারের চারটি বাক্যের চিঠিতে আগের বৈঠকের কোনও প্রসঙ্গই নেই।
মঙ্গলবার দিল্লিতে বৈঠকে মমতা যোগ দেবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তৃণমূলের তরফে কে যোগ দেবেন, তা-ও এখনও নিশ্চিত নয়। তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, এ বিষয়ে দলীয় নেতৃত্ব সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে বিরোধী শিবিরের সর্বসম্মত প্রার্থীকে তৃণমূল সমর্থন করবে। কংগ্রেস এর আগের বৈঠকে তিন জনকে পাঠালেও মঙ্গলবারের বৈঠকে শুধু মাত্র মল্লিকার্জুন খড়্গে যোগ দেবেন। খড়্গে বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে এক দফা কথা বলেছেন।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ‘হারা ম্যাচ’ জেনেও বিরোধী শিবিরের প্রার্থী হতে রাজি হবেন, এমন কারও খোঁজ এখনও পর্যন্ত মেলেনি। উল্টে বিরোধী দলগুলির মধ্যে কার কত ওজন বেশি, তা নিয়ে ঠান্ডা লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, তারা কোনও নাম প্রস্তাব করবে না। দলের তরফে আগেই বলে দেওয়া হয়েছে, কংগ্রেসের ভাবনায় কারও নাম নেই।
কেন এই সিদ্ধান্ত? এআইসিসি-র এক নেতা বলেন, ‘‘কংগ্রেস যদি দলের কোনও নেতার নাম, এমনকি
সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়া বা অবসর নিতে চলেছেন, এমন কোনও কংগ্রেসির নাম প্রস্তাব করে, তা হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই সবার আগে বিরোধিতা করবেন। তার চেয়ে মমতা ও পওয়ার বাকিদের সঙ্গে কথা বলে প্রার্থী ঠিক করুন।’’ শিবসেনা প্রকাশ্যেই গোপালকৃষ্ণ গান্ধী বা ফারুক আবদুল্লা তেমন ওজনদার প্রার্থী নন বলে মত দিয়েছে। কংগ্রেস যদিও মনে করছে, প্রার্থী হিসেবে এই দু’জন খারাপ নন। ফারুক অবশ্য আজ নিজেই প্রস্তাব নাকচ করে বলেছেন, জম্মু-কাশ্মীর এখন যে অনিশ্চিত সময়ের মধ্যে দিয়ে এগোচ্ছে, সেখানে তাঁর প্রয়োজন বেশি। সূত্রের খবর, গোপালকৃষ্ণও এখনও সম্মতি দেননি।
এই প্রেক্ষিতে কে বিরোধীদের প্রার্থী হবেন, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কংগ্রেস ও অধিকাংশ বিরোধী দল অবশ্য এখনও একটি বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তা হল, বিজেপি যাঁকেই প্রার্থী করুন না কেন, তা তিনি আদিবাসী, মহিলা, প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাসিন্দা, যে-ই হোন, তাঁকে সমর্থন করার প্রশ্নই নেই। কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘‘গত নির্বাচনে মীরা কুমার দলিত মহিলা হলেও তো তাঁকে বিজেপি সমর্থন করেনি!’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।