বিজেপি বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থাকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেই চলেছে, অভিযোগ মমতার। ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে বুধবার সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী (বিএসএফ)-র এক্তিয়ার বৃদ্ধি নিয়ে কথা বলবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লি যাওয়ার আগে সোমবার কলকাতা বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘‘বাংলার উন্নয়নের নানা বিষয় নিয়ে কথা তো হবেই। তবে মূলত আলোচনা হবে বিএসএফ নিয়ে।’’ বিএসএফের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকা ১৫ কিলোমিটার থেকে ৫০ কিলোমিটার হওয়া নিয়ে বাংলা বনাম কেন্দ্র তরজা চলছিলই। সোমবার মমতা প্রকাশ্যে বললেন, ‘‘গায়ের জোরে এলাকা দখল করতে দেব না। বিএসএফ আমার বন্ধু। তবে বিএসএফ মানে বিজেপি নয়।’’
দেশের সীমান্তবর্তী তিন রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ, অসম এবং পঞ্জাবে বিএসএফের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকা বৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বাংলার শাসক দল তৃণমূল। কেন্দ্রের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, বর্ধিত এলাকায় তল্লাশি, বাজেয়াপ্ত এবং গ্রেফতার করতে পারবে বিএসএফ। দিল্লি যাওয়ার আগে মমতা বলেন, ‘‘বিএসএফের ব্যাপারে কথা বলতে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাইব, বিএসএফ মানে বিজেপি সেফ কি না।’’
বিএসএফের এলাকা বৃদ্ধি নিয়ে গত ১৭ নভেম্বরই বিধানসভায় একটি প্রস্তাব পাস করে তৃণমূল। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত যে যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো বিরোধী তা-ই জানানো হয়েছিল প্রস্তাবে। যদিও ওই প্রস্তাব অসাংবিধানিক এবং গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। প্রস্তাব পাস হলেও তার কার্যবিবরণী তাঁকে পাঠানো হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। রাজ্য বিজেপির সঙ্গেও তৃণমূল নেতাদের এ নিয়ে বেশ কয়েক দফা বাগযুদ্ধ হয়। একদিকে বিএসএফকে অপমান করার অভিযোগ আনে বিজেপি। অন্যদিকে তৃণমূলের অভিযোগ, রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করেছে কেন্দ্র। মমতা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বাংলার বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হবে, ‘‘বিএসএফ নিয়েই কথা বলতে যাচ্ছি। বিএসএফ আমাদের শত্রু নয়। বিএসএফ বন্ধু। তবে কেন্দ্র যে ভাবে বিভিন্ন এজেন্সিকে পার্টির কাজে লাগাচ্ছে তা ঠিক নয়।’’
গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দাবি, জাতীয় সুরক্ষার দিকে লক্ষ্য রেখে সীমান্ত সংলগ্ন স্পর্শকাতর রাজ্যগুলোতে বেআইনি কার্যকলাপ রোধে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা মানতে নারাজ বাংলা এবং পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নী নয়া নির্দেশিকায় আপত্তি জানিয়ে ইতিমধ্যেই টুইট করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা করেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দ্রুত এই অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের নতুন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে এই প্রসঙ্গটি তুলবেন বলে জানালেন মমতাও।