Mamata Banerjee

শিলংয়ে প্রচারের সূচনা মমতার

বিরোধী দলনেতা মুকুল সাংমার ভূয়সী প্রশংসা করলেও মমতা বলেন, “দল ৬০ আসনেই লড়বে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম ভোটের দিন ঘোষণার পরেই ঘোষণা করা হবে।”

Advertisement

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

শিলং শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:১২
Share:

শিলংয়ে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়েছেন অভিষেকও। মঙ্গলবার। পিটিআই

বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের দুপুরে শিলংয়ে রাজ্য গ্রন্থাগার প্রেক্ষাগৃহ চত্বর তো বটেই, শহর জুড়েই নীল-সাদার বাহার। মেসি তাঁর দলকে তুলেছেন বিশ্বকাপ ফুটবলের সেমিফাইনালে। সেই দিনেই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মেঘালয়ে বিধানসভা ভোটের ফাইনাল যুদ্ধ-ঢাক বাজিয়ে দিল তৃণমূল। আক্ষরিক অর্থেই আজ রণ-দামামা বাজিয়ে ভোটপ্রচারের সূচনা করলেন মমতা। ইউ সো সো থামের প্রবেশপথ দিয়ে ঢোকার পরে তাঁর অভ্যর্থনায় আসা গারো ঢোল বাদকের দলের এক কিশোর বাদকের গলা থেকে খুলে নিলেন ঢোল। এর পরে প্রেক্ষাগৃহের দরজা পর্যন্ত রাস্তাটা নিজেই সেই ঢোল বাজাতে বাজাতে এলেন।

Advertisement

কর্মী সম্মেলনে মেঘালয়ে পরিবর্তনের ডাক দিলেন তিনি। সেই ডাকে মমতার প্রধান হাতিয়ার লক্ষ্মীর ভান্ডারের আদলেই তৈরি মহিলাদের জন্য ‘উই কার্ড’। মহিলাদের হাতে হাতে তুলে দেওয়া হল গোলাপি কার্ড। মমতা জানিয়েছেন, আগামী বছর ফেব্রুয়ারির পর থেকেই কার্ডে মাসে হাজার টাকা করে জমা পড়তে থাকবে। ওই সময়ের মধ্যে মেঘালয়ে নির্বাচন হয়ে যাওয়ার কথা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ক্ষমতায় এলে ‘উই কার্ডে’র মাধ্যমে টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।

বিরোধী দলনেতা মুকুল সাংমার ভূয়সী প্রশংসা করলেও মমতা বলেন, “দল ৬০ আসনেই লড়বে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম ভোটের দিন ঘোষণার পরেই ঘোষণা করা হবে।”

Advertisement

বক্তৃতার সূচনায় তৃণমূলকে ‘বাংলার দল’ বলে দাগিয়ে দেওয়ার তীব্র বিরোধিতা করে রবীন্দ্রনাথ, বঙ্কিমচন্দ্র, নেতাজি, মাদার টেরেসার নাম নিয়ে মমতা বলেন, “ওঁদের যদি শুধু বাংলার মানুষ বলে দাগিয়ে রাখা না হয়, তবে তৃণমূলের ক্ষেত্রে এই অন্যায় কেন? আমি গর্বিত বাঙালি। কিন্তু তৃণমূল সর্বভারতীয় দল। দেশে একমাত্র তারাই বিজেপির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে টক্কর দিচ্ছে। তাই কখনও অপপ্রচার, কখনও সিবিআই-ইডি লেলিয়ে দিয়ে আমাদের দমন করার চেষ্টা হচ্ছে।” মমতার ভরসা-বাক্য, “দিল্লি বা অসম নয়, সুশাসনের মডেল হল বাংলা। দিল্লি, গুয়াহাটি বা কলকাতা নয়, মেঘালয়ের শাসনভার থাকবে ভূমিপুত্রদের হাতে। আমি দিদি হিসেবে ও অভিষেক ভাই হিসেবে পরামর্শ দেব মাত্র।”

বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার বাবা পূর্ণ সাংমার কথা মনে করিয়ে মমতা বলেন, “বহু বছর আগে পূর্ণ সাংমার হয়ে প্রচারে তুরা গিয়েছিলাম। মেঘালয়ের সঙ্গে অনেক দিনের সম্পর্ক।” বিজেপির টাকা ছড়িয়ে ভোট কেনার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “ওদের থেকে টাকা নিন। কারণ আদতে তা আপনাদেরই টাকা। কিন্তু ভোটটা আমাদের দেবেন।” এনআরসি-র তীব্র বিরোধিতা করে তিনি বলেন, “বিজেপি এনআরসি করে অসমে মানুষ মারছে। ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।” পরে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি ঘোষণা করেন, ক্ষমতায় এলে অসমের হস্তগত হওয়া মেঘালয়ের জমি ফেরত আনা হবে। কিন্তু কী ভাবে? জবাব, “মানুষকে সঙ্গে নিয়ে, মাথা ঠান্ডা রেখে।”

মুখরোয় অসম পুলিশের গুলিতে মৃত মেঘালয়ের ৫ গ্রামবাসীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সকালে দেখা করেন মমতা। তাঁদের হাতে তুলে দেন ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের চেক। কর্মী সম্মলনে মমতা বলেন, “এখানকার মুখ্যমন্ত্রী এতটাই অপদার্থ যে নিজের মানুষের প্রাণের জন্য, অধিকারের জন্য লড়ার মতো শিরদাঁড়ার জোর তাঁর নেই।” তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এমন ঘটনা বাংলায় হলে মমতা উচিত শিক্ষা দিতেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement