মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।
লোকসভা ভোটের সময়ে যে কৃষক আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তা অব্যাহত। আজ হরিয়ানা-পঞ্জাব সীমানার খনউরিতে আন্দোলনরত সেই কৃষকদের সঙ্গে দেখা করতে যায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। কৃষকদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন, কৃষকদের দাবি নিয়ে সংসদে সরব হবে দল।
মূলত কৃষকদের ক্ষোভের কারণে তিন বিজেপি শাসিত রাজ্য রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশে, হরিয়ানায় খারাপ ফল করেছে বিজেপি তথা এনডিএ। আগামী দিনে দেশ জুড়ে গেরুয়া শিবিরকে প্রবল লড়াইয়ের মুখে ফেলতে প্রস্তুতি শুরু করেছে খনউরি-তে বসে থাকা সংযুক্ত কিসান মোর্চা (অরাজনৈতিক) ও কিসান মজদুর মোর্চা। নরেন্দ্র মোদী সরকার বিরোধী ওই আন্দোলনকে সমর্থনের বার্তা দিতে আজ তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের নেতৃত্বে পাঁচ সাংসদের একটি দল খনউরি যায়। এলাকাটি ঘুরে দেখেন তাঁরা। পরে আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে ফোনে মমতার কথা বলিয়ে দেন ডেরেক। কৃষকদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘শত অত্যাচার সত্ত্বেও আপনারা লড়াই করে যাচ্ছেন। নিজেদের জায়গা থেকে নড়েননি। আমাদের ৪২ জন সাংসদ নিয়ে তাই আপনাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে চাই। আপনাদের যা চাহিদা রয়েছে, তা আমাকে জানাতে পারেন। যদিও আমাদের সরকার আসেনি, কিন্তু চাহিদা পূরণ করার চেষ্টা করব।’’ এরপরেই মমতা কৃষকদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘‘এই সরকার গড়বড় সরকার, নড়বড়ে সরকার। আপনারা আন্দোলন জারি রাখুন। দরকার হলে আমরাও যাব।’’
তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, কবে সরকার ফেলার সুযোগ আসবে, তার জন্য বসে থাকার পক্ষপাতী তাঁরা নন। উল্টে আগ্রাসী নীতি নিয়ে সরকারকে বিপাকে ফেলার সবরকম চেষ্টা তাঁরা করে যাবেন। তা ছাড়া, মমতা খুব ভাল করেই জানেন, কৃষক অসন্তোষের বিষয়টি এমন স্পর্শকাতর যে এ নিয়ে কোনও জোট শরিককে পাশে পাবে না বিজেপি। তাই কৃষক প্রশ্নে সরকারকে গোড়াতেই আক্রমণের কৌশল নেন মমতা। তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব স্থির করেছেন, দেশের যে যে প্রান্তে বিজেপি বিরোধিতা মাথা তুলেছে, সেখানে পৌঁছে গিয়ে আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়াবে তৃণমূল। আজ ডেরেক বলেন, ‘‘মূলত আন্দোলনকারী কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিতেই তৃণমূলের সাংসদেরা সেখানে গিয়েছিলেন। দল কৃষকদের দাবিদাওয়ার বিষয়টি সংসদে তুলবে।’’
কৃষকদের ওই দু’টি সংগঠন যৌথ বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছে, অবিলম্বে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য চালু ছাড়াও স্বামীনাথন কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী ফসলের দাম স্থির করতে হবে। এ ছাড়া, গ্রেফতার হওয়া কৃষকদের মুক্তি ও প্রবীণ কৃষক-মজদুরদের অবসরকালীন ভাতা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে দুই সংগঠন।