কংগ্রেস থেকে বিধায়ক ভাঙিয়ে ত্রিপুরার বিরোধী রাজনীতিতে জমি দখল করেছিল তৃণমূল। এখন সেই জায়গা নিয়ে নিয়েছে বিজেপি। এ বার বিধানসভা ভোটে হারানো জমি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে নামছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।
সিপিএম এবং বিজেপি-র বিরোধী শক্তি হিসাবে ফের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার জন্য ত্রিপুরায় পদক্ষেপ শুরু করেছে তারা। দলের তরফে ওই রাজ্যের পর্যবেক্ষক সব্যসাচী দত্ত ইতিমধ্যে আলোচনা সেরেছেন কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে। বিজয় রাঙ্খলের নেতৃত্বাধীন আইএনপিটি-র সঙ্গেও যোগসূত্র গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। সব্যসাচীর লক্ষ্য, ফের নতুন করে শুরু করেও মানিক সরকারের রাজ্যে দ্রুত চোখে পড়ার মতো শক্তি হয়ে ওঠা। মুকুল-বিদায়ের পরে তৃণমূল নেত্রীও এখন সব্যসাচীর উপরে ত্রিপুরার ব্যাপারে আস্থা রাখছেন। বিধাননগরকে মেয়র সব্যসাচীকে আপাতত ত্রিপুরায় সময় দিতে বলা হয়েছে।
বামফ্রন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে মরিয়া বিজেপি এ বার উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে উপজাতি সংগঠন আইপিএফটি-র সঙ্গে জোট করছে। এন সি দেববর্মা, মেবার জামাতিয়াদের ওই সিদ্ধান্তে আইপিএফটি-র একটি অংশ আবার ক্ষুব্ধ। তারা যোগাযোগ রাখছে কংগ্রেসের সঙ্গে। চেষ্টা চলছে, কংগ্রেস, রাঙ্খল-সহ উপজাতিদের কিছু সংগঠন এবং তৃণমূল মিলে তৃতীয় একটি ফ্রন্ট বিধানসভা ভোটে খাড়া করার। প্রাথমিক ভাবে তৃণমূলের তরফে প্রস্তাব আছে, ত্রিপুরার অর্ধেক আসন কংগ্রেস লড়ুক। বাকি অর্ধেক ভাগ হোক তৃণমূল এবং রাঙ্খলদের মধ্যে। ত্রিপুরা কংগ্রেসের এক নেতা অবশ্য বলছেন, কিছুই এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
মুকুল ওয়াসনিকের নেতৃত্বে এআইসিসি-র স্ক্রিনিং কমিটি আগামী ২৬ জানুয়ারি দিল্লিতে বৈঠক ডেকেছে। কমিটিতে রাখা হয়েছে অমিতাভ চক্রবর্তী ও শাকিল আহমেদ খানকে। জোট হবে কি না, কত আসনে প্রার্থী দেওয়া হবে, সেই বিষয়ে প্রদেশ নেতৃত্বের মতামত নিয়ে আলোচনা চালাবে ওই কমিটি। বাকি বিরোধীদের সঙ্গে সমঝোতার ছবি স্পষ্ট হলে তৃণমূল নেত্রীও প্রয়োজনে ত্রিপুরায় প্রচারে যেতে পারেন।
প্রতি বারই ত্রিপুরার ভোটে বাংলার নেতাদের ডাক পড়ে সব দলের তরফে। এ বারও বাংলা থেকে সিপিএমের সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসু, মহম্মদ সেলিমেরা যাচ্ছেন প্রচারে। বাংলাভাষী নেতা হিসাবে দিল্লি থেকে যাবেন সাংসদ তপন সেনও। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির অনুরোধ থাকলেও এ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান অবশ্য ত্রিপুরায় যেতে চান না। তাঁর যুক্তি, বাংলায় সিপিএমের সমর্থনে জিতেই তিনি বিরোধী নেতা হয়েছেন। ত্রিপুরায় শাসক সিপিএমের বিরুদ্ধে তিনি বলতে গেলে ‘বিশ্বাসযোগ্যতা’ নিয়ে জনমানসে প্রশ্ন উঠতে পারে!