তৃণমূলের অনেক নেতাই বারবার বলেছেন, তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান। গত শনিবার ব্রিগেড সমাবেশের পরে কলকাতা ছাড়ার আগে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামীও বলে যান, তৃণমূল নেত্রী মমতা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য। ফলে তৃণমূলের ইচ্ছে আবার নতুন মাত্রা পেল। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কুমারস্বামীর মতকে সমর্থন করে সোমবার বললেন, তিনি ঠিক কথাই বলেছেন।
শনিবারের ব্রিগেডে বিরোধী নেতাদের সমাবেশ-মঞ্চে জোটের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, সে প্রশ্ন বারবার এসেছে। মমতা-সহ সব দলের সব নেতাই একসুরে বলেছেন, সে সব ঠিক হবে ভোটের ফল বেরনোর পরে। এখন বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করাই এক এবং একমাত্র লক্ষ্য। কিন্তু সমাবেশের পরেই কুমারস্বামী পিটিআই-কে একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুবই সাধারণ। সুদক্ষ প্রশাসক। দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার সব যোগ্যতাই ওঁর রয়েছে বলে আমার বিশ্বাস। পশ্চিমবঙ্গকে বেশ কয়েক বছর ধরে নেতৃত্ব দিয়ে ইতিমধ্যেই তিনি তা প্রমাণও করেছেন।’’
এর আগে ডিএমকে নেতা স্ট্যালিন প্রধানমন্ত্রী পদে রাহুল গাঁধীর নাম প্রস্তাব করে জল্পনা উস্কে দিয়েছিলেন। তার পর ব্রিগেড ঘুরে তামিলনাড়ু ফেরার পরে তিনি তাঁর ওই বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে দাবি করেন, তামিলনাড়ুর জনগণ রাহুলকে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান। তিনি সেটাই বোঝাতে চেয়েছিলেন।
সেই বক্তব্যের জের না কাটতেই এ বার মমতাকে প্রধানমন্ত্রী চেয়ে কুমারস্বামীর মন্তব্য আরও এক বার বিরোধী-জোটের মঞ্চে নতুন চর্চা তৈরি করল। স্ট্যালিনের বক্তব্যে সরাসরি সায় না দিয়েও কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংহ বলেছিলেন, জোটের প্রধানমন্ত্রী ভোটের পরে ঠিক হবে। তবে কংগ্রেসের প্রধানমন্ত্রী-প্রার্থী হবেন রাহুল গাঁধীই।
সোমবার কুমারস্বামীর বক্তব্য সামনে আসার পরে কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘ভোটের পরে যে প্রধানমন্ত্রী ঠিক হবে, সে তো ব্রিগেডে সব নেতাই সর্বসম্মতভাবে বলেছেন। কুমারস্বামীও তো সেখানে ছিলেন। কিন্তু কী প্রেক্ষিতে এখন উনি এ সব বলছেন, জানি না!’’
মমতার উপরে কুমারস্বামীর এই ‘আস্থা’য় অবশ্য উজ্জীবিত তৃণমূল শিবির। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কুমারস্বামী ঠিকই বলেছেন। ব্রিগেডে এক মঞ্চে এক সঙ্গে দেশের এত বড় বড় নেতা আগে কখনও এসেছেন বলে মনে হয় না। তাঁর সাদা-মাঠা জীবনযাপন, জাতীয় রাজনীতিতে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা সবই প্রশ্নাতীত। বেশ কয়েক বার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব সামলানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। এ রাজ্যেও নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও উন্নয়ন করে চলেছেন তিনি। সব ভেবেই কুমারস্বামী এ কথা বলেছেন।’’ পার্থবাবুর ব্যাখ্যায়, ‘‘ব্রিগেডে এত লোকের সমাবেশের রেকর্ড আর কারও আছে কী? নোটবন্দি, জিএসটি, সিবিআই নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এতদিন ধরে যা বলেছেন, সে কথাই তো এক সুরে বললেন ২৪ জন জাতীয় নেতা। আগে কখনও এমন হয়নি।’’