নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার। নিজস্ব চিত্র।
‘দিদি খুশ হুয়া?’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফর শেষ হওয়ার পরের দিন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশ্ন তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
স্থান: লোকসভায় স্পিকারের কক্ষ।
কাল: আজ, সোমবার লোকসভা অধিবেশন অনির্দিষ্ট কালের জন্য মুলতুবি হয়ে যাওয়ার পর সর্বদলীয় নেতা-মন্ত্রীদের ঘরোয়া চায়ের আসর।
পাত্র: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী, তৃণমূলের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌগত রায়-সহ বিএসপি, ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সংসদীয় নেতা ও সাংসদেরা।
চায়ের আসরের পরে সুদীপ বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে বললাম, আপনার নীতি আয়োগের বৈঠক তো ভাল হয়েছে। তখন তিনি বলেন, দিদি খুশ হুয়া?” সুদীপ জবাব দেন, “দিদি খুশি, কিন্তু আরও খুশি হবেন যদি আপনার সঙ্গে পৃথক বৈঠকে যে দাবিগুলি উনি করেছেন সেগুলির সুরাহা আপনি করেন।”
সুদীপকে সরাসরি কোনও উত্তর না দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনিও ‘দিদি’র সঙ্গে দেখা হলে খুশি হন। সুদীপের কথায়, “প্রধানমন্ত্রী বললেন, আমিও দিদির সঙ্গে দেখা হলে খুবই খুশি হই।” প্রসঙ্গত, এ বার দিল্লি সফরে হলুদ গোলাপ, মিষ্টি দই আর বাটিকের উত্তরীয় নিয়ে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মোদীর সঙ্গে দেখা করতে।
ওই চা-চক্রেই মোদীর সঙ্গে কথা হয় তৃণমূলের অন্য সাংসদ সৌগত রায়ের। প্রধানমন্ত্রী সেখানে সৌগতকে জানান, যে নতুন সংসদীয় ভবন গড়া হচ্ছে, ‘দিদি’ তার প্রশংসা করেছেন। সৌগতের কথায়, “আমি প্রধানমন্ত্রীকে বললাম, এই অধিবেশনে আপনার বক্তৃতা শোনা হল না। তখন রাজনাথ সিংহ বলে ওঠেন, সব সময় প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা দেওয়ার দরকার নেই। আমি তাঁকে বলি, সবাই শুনতে চায়, দেশের প্রধানমন্ত্রী কী বলছেন। এর পর মোদী আমাকে বলেন, আপনারা বেঙ্কাইয়া নায়ডুর বিদায় সংবর্ধনায় আসুন, সেখানে আমি বক্তৃতা দেব।”
এই কথোপকথনের মধ্যেই স্পিকার ওম বিড়লা নতুন সংসদীয় ভবনের কথা উল্লেখ করে জানান, সংসদের পরের শীতকালীন অধিবেশন সেখানেই হবে। নতুন সংসদ ভবন নিয়ে কথাবার্তায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ তোলেন মোদী। পরে সৌগত বলেন, “প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, নতুন ভবনের প্রশংসা দিদিও করেছেন। আমি তখন বলি, দিদির সঙ্গে তো আপনার সম্প্রতি দেখা হয়েছে।” সৌগত স্পিকারের কাছে জানতে চান, নতুন ভবনে সেন্ট্রাল হল থাকছে কিনা। স্পিকার তাঁকে জানান, ‘কাফে’র মতো একটি জায়গা থাকবে। সৌগতের মন্তব্য, “কথার পিঠেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাজের জন্য যথেষ্ট জায়গা থাকবে। তিনি ইঙ্গিতে বোঝাতে চেয়েছেন, নিছক গল্পগুজবের জন্য কোনও জায়গা না থাকলেও কাজের জায়গার অভাব হবে না।” চা চক্রের শেষে প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক কুশল জানতে চান তৃণমূলের প্রবীণ নেতা সৌগত রায়। সৌগতের কথায়, “মোদী বললেন, আমি তো রোজ ২ কেজি গালি খাই আর সে সব হজম করি! তাই আমার শরীর ভালই আছে!”