মালবিকা আইয়ারের ফেসবুক থেকে নেওয়া ছবি।
অনেকের কাছে তিনি অনুপ্রেরণা, বিশ্বজুড়ে তাঁর বক্তৃতায় অনুপ্রাণিত হন বহু মানুষ। ডক্টর মালবিকা আইয়ারের জীবন যুদ্ধের কাহিনি ফের উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করে অনেক মানুষকে। সম্প্রতি তাঁর জন্মদিনে নিজেকে শুভেচ্ছা জানিয়ে একটি টুইট করেন মালবিকা। সেখানে জীবনের প্রতি তাঁর আশাবাদী মনোভাবই ফুটে উঠেছে। প্রচুর নেটাগরিক তাঁর এই মনোভাবের প্রশংসা করেছেন।
তামিলনাড়ুর কোমবাকোনামে ১৯৮৯ সালে এক ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মালবিকা। বাবা চাকরি সূত্রে তাঁর ছোটবেলা কাটে রাজস্থানের বিকানেরে। ২০০২ সালের ২৬ মেবিকানেরের বাড়িতে একটি গ্রেনেড বিস্ফোরণ হয়, গুরুতর আহত হন, দু’টি হাতই উড়ে যায়। ১৮ মাস হাসপাতালে কাটে।
মালবিকা জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচার সময় চিকিত্সকরা কিছু ভুল করে ফেলেন। যার ফলে তাঁর ডান হাতের হাড় মাংসপেশির বাইরে রয়ে যায়, আর ঢাকা পড়েনি। যে হাড়ে যদি এখনও জোরে কোনও আঘাত লাগে প্রাণ বেরিয়ে যাওয়ার যোগাড় হয়। কিন্তু সেই বেরিয়ে থাকা হাড়ই তাঁর এক মাত্র আঙুলের কাজ করে। যা তাঁকে টাইপ করতে সাহায্য করে। এর সাহায্যেই তিনি নিজের পিএইচডি থিসিস টাইপ করেছেন।
আরও পড়ুন: কলেজের পর প্রেমে পড়ে প্রায় বিয়ে করে নিচ্ছিলেন, জীবন কাহিনি শোনালেন রতন টাটা
হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর শুরু হয় মালবিকার লড়াই। সেই লড়াই একটু একটু করে জিততে শুরু করেন তিনি।দিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে স্নাতক ও দিল্লির স্কুল অফ সোশ্যাল ওয়ার্ক থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পরে ২০১২ সালে চেন্নাই থেকে এমফিল করেন। সোশ্যাল ওয়ার্কের উপরেই পিএইচডি করেন।
আরও পড়ুন: ৭০ লাখ নয়, এক লাখ লোক হবে মোদী-ট্রাম্পের রোড শোয়ে, মত প্রশাসনের
পড়াশোনা শেষ করে সমাজসেবা শুরু করেন মালবিকা। তাঁর মতোই যাঁদের অঙ্গহানি হয়েছে তাঁদের নিয়েই তাঁর কাজ। সেই সঙ্গে চলে মোটিভেশনাল স্পিচ,মডেলিং। সমাজসেবায় তাঁর ভূমিকার জন্য মহিলা হিসেবে দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান, ‘নারী শক্তি পুরস্কার’ পান মালবিকা। ২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে (৮ মার্চ) রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ তাঁর হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন।
আরও পড়ুন: আপনার সামনেই ওজন হবে উচ্ছিষ্ট, ১০ গ্রামের জন্য দিতে হবে ১০০ টাকা
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মালবিকার জন্মদিন ছিল। সেদিন সকালে নিজের ভেরিফায়েড টুইটার হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করেন। যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘জন্মদিনে আমাকে শুভেচ্ছা’। সেই সঙ্গে বোমার আঘাতে দু’টি হাত উড়ে যাওয়ার কথাও লিখেছেন। যাতে তাঁর লড়াকু মানসিকতারই ঝলক মিলেছে। এই টুইটের কমেন্ট বক্সে আরও কয়েকটি টুইট করেন মালবিকা। সেখানে তিনি তাঁর লড়াই অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন। আর সেই সব টুইট প্রচুর নেটাগরিক লাইক, শেয়ার করেছেন। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কুর্নিশ করেছেন তাঁর জীবন যুদ্ধকে।
দেখুন সেই পোস্ট: