মলয় ঘটক। ফাইল চিত্র।
দিল্লি হাই কোর্টে এসে আপাতত স্বস্তি পেলেন পশ্চিমবঙ্গের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক।
কয়লা পাচার কাণ্ডের তদন্তে ইডি বারবার সমন পাঠানোয় মলয় ঘটক দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি অনীশ দয়াল জানিয়েছেন, সাংসদ-বিধায়কদের মামলা শোনার জন্য নির্দিষ্ট বেঞ্চে ১২ এপ্রিল এই মামলার শুনানি হবে। সমন পাঠানো সত্ত্বেও মলয় আসেননি অভিযোগ তুললেও ইডি-র তরফে আজ আদালতে মৌখিক ভাবে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, আপাতত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারির মতো দমনমূলক পদক্ষেপ করা হবে না।
কয়লা পাচার কাণ্ডের তদন্তে গত বছর সিবিআই মলয় ঘটকের কলকাতা ও আসানসোলের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল। ইডি তাঁকে দিল্লিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছিল। এক বার তিনি দিল্লিতে এসে ইডি-র তদন্তকারীদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। সম্প্রতি ইডি তাঁকে ফের সমন পাঠালেও মলয় আসেননি। এর পরেই তিনি দিল্লি হাই কোর্টে মামলা করেন।
আজ মলয়ের হয়ে আইনজীবী ফারুক এম রজ্জাক ও সায়নদীপ পাহাড়ি যুক্তি দেন, মলয় নিজেও আইনজীবী। তিনি রাজ্যের আইনমন্ত্রী। তিনি মামলায় অভিযুক্ত নন। ইতিমধ্যে এক বার তদন্তকারীদের মুখোমুখি হয়েছেন। যে সমস্ত নথি চাওয়া হয়েছিল, তা-ও জমা দিয়েছেন তিনি। তারপরেও তাঁকে ছয়-সাত বার সমন পাঠানো হয়েছে। ইডি-র হয়ে আইনজীবী অনুপম শর্মা বলেন, মলয়কে সমন পাঠানো হলেও তিনি আসেননি। মলয়ের আইনজীবী পাল্টা অভিযোগ তোলেন, যে দিন দেশের রাষ্ট্রপতি কলকাতায় ছিলেন, সে দিন তাঁকে দিল্লিতে সমন পাঠানো হয়েছে। যে দিন কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির শপথ, সে দিনও তাঁকে সমন পাঠানো হয়েছিল।
বিচারপতি দয়াল ১২ এপ্রিল নির্দিষ্ট বেঞ্চে মামলা হবে বলে জানানোয় মলয়ের আইনজীবীরা দাবি তোলেন, এর মধ্যে যেন ইডি মলয়ের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ না করে। ইডি-র তরফে জানানো হয়, তেমন কিছু করা হবে না। তিনি অভিযুক্ত নন। মলয়ের আইনজীবীরা বলেন, মামলা থেকে পুরোপুরি নাম সরাতেই তাঁরা দিল্লি হাই কোর্টে এসেছেন। বিচারপতি দয়াল বলেন, ঘরোয়া ভাবে ইডি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, শুনানির আগে গ্রেফতারির মতো পদক্ষেপ করা হবে না। ইডি-র তরফে জানানো হয়, কেন মলয়কে বারবার সমন পাঠানো হচ্ছে, আগামী শুনানির দিন কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এস ভি রাজু তা নিয়ে সওয়াল করবেন।
সিবিআই ও ইডি সূত্রের অভিযোগ, ২০২০-তে কয়লা পাচার কাণ্ডের তদন্ত শুরুর পরে মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালার কিছু নথির ভিত্তিতে মলয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। আসানসোল উত্তরের বিধায়ক হলেও লালা যে জেলার বাসিন্দা, সেই পুরুলিয়ায় তৃণমূলের পর্যবেক্ষক পদে কাজ করেছেন মলয়।