—প্রতীকী ছবি।
কেন্দ্রীয় আইন কমিশনের কাছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকরের প্রস্তাবের বিরোধিতা করে নিজেদের মত জানাল ‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড’। বুধবার সংস্থার তরফে এ কথা জানানো হয়েছে। মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের বিবৃতি জানাচ্ছে, মূলত পাঁচটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিরোধিতা করা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম বিষয় হল, পূর্ববর্তী ২১-তম আইন কমিশনের মত ছিল, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কাঙ্ক্ষিত নয়। তা ছাড়া, এই অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রয়োগ হলে ‘মুসলিম পারিবারিক আইন’ (পার্সোনাল ল) বিপন্ন হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা ল বোর্ডের। বিধি প্রয়োগের আগে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বাধিকার রক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে কেন্দ্র-নিযুক্ত ২২তম আইন কমিশনের কাছে। গত ১৪ জুন ২২তম আইন কমিশনের তরফে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর বিষয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন এবং আমজনতার মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহ পর্যন্ত এ বিষয়ে প্রায় ১০ লক্ষ ব্যক্তি এবং সংগঠনের প্রতিক্রিয়া জমা পড়েছে বলে আইন কমিশন সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বলবীর সিংহ চৌহানের নেতৃত্বাধীন ২১-তম আইন কমিশনের মত ছিল, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করে বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, উত্তরাধিকারের মতো পারিবারিক বিষয়ে হিন্দু, মুসলমান, শিখ, খ্রিস্টান, পার্সি, জৈন সকলের জন্য একই আইন চালু করার প্রয়োজন নেই। সেই প্রসঙ্গ এসেছে ‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড’-এর মতামতে। বলা হয়েছে, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠের নৈতিকতা যাতে ব্যক্তিগত অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ না-করে, তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন’।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত ২৭ জুন ভোপালে বিজেপির কর্মসূচিতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পক্ষে জোরদার সওয়াল করেছিলেন। সে রাতেই বিষয়টি নিয়ে জরুরি ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেছিলেন মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্যেরা। ভার্চুয়াল মাধ্যমে হওয়া বৈঠকে প্রস্তাবিত আইনের সম্ভাবনার দিকটি নিয়ে আলোচনা হয়। লোকসভার বাদল অধিবেশনেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল পেশ করা হবে বলে জানিয়েছেন দিল্লির বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র। যা ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এই পরিস্থিতিতে শনিবার দিল্লির জামা মসজিদের শাহি ইমাম সৈয়দ আহমেদ বুখারি দেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিতর্কে নীরব থাকার ‘ফতোয়া’ দিয়েছেন।