প্রতীকী ছবি।
নীতীশ কুমার পুরনো জোট ছেড়ে আরজেডি-র সঙ্গে মহাগঠবন্ধন গড়ায় বিহারে জোর ‘ধাক্কা’ খেয়েছে বিজেপি। এ বার সেই ‘ধাক্কা’ সামাল দিতে সাংগঠনিক পুনর্বিন্যাস ও বিস্তারে মন দিতে চাইছে কেন্দ্রের শাসদক দল। বিজেপির তরফে অবশ্য প্রকাশ্যে ‘ধাক্কা’র বিষয়টিকে স্বীকার না করে, একে ‘রুটিন পরিবর্তন’ বলে দাবি করা হচ্ছে। মঙ্গলবার বিহার বিজেপির কোর কমিটির সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একটি বৈঠক হয়। তার পরই রাজ্য সংগঠনে আমূল পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিহার বিজেপি সূত্রে খবর, সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে সাংগঠনিক রদবদলের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে পারে।
সাংগঠনিক রদবদলের বিষয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সঞ্জয় জায়সবাল জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাজে জনসাধারণ সন্তুষ্ট হলেও, স্থানীয় নেতৃত্বের প্রতি মানুষের অনেক ক্ষোভ আছে। তাই সংগঠনে কার্যকরী পরিবর্তন জরুরি বলে জানিয়েছেন জায়সবাল। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপি নেতা বলেন, “রাজ্যে এখন যা পরিস্থিতি, তাতে এক জন নতুন রাজ্য সভাপতি আর শক্তিশালী বিরোধী দলনেতা প্রয়োজন।”
সাংগঠনিক পরিবর্তনই শুধু নয়, বিহারের আরও বেশি মানুষের কাছেও পৌঁছনোর চেষ্টা করছে বিজেপি। বিহারের মতো বহু জাতপাতে বিভক্ত একটি রাজ্যে জাতপাতের সমীকরণকেও মাথায় রেখে এগোতে চাইছে দল। রাজ্যের মোট জনসংখ্যার অন্তত ৫০ শতাংশ অতি-অনগ্রসর বা ইসিবি সম্প্রদায়ের লোক। এই অঙ্ককে মাথায় রেখেই এই সম্প্রদায়ের উপর নিজের প্রভাব বাড়াতে চাইছে বিহারের অধুনা বিরোধী দল। রাজ্যের দলিত ভোটের ১৭ শতাংশকেও নিজেদের অনুকূলে আনতে চাইছে তারা। মূলত দলিত, অনগ্রসর বা ওবিসি সম্প্রদায়ের মধ্যে নীতীশের দল জেডি(ইউ)-এর বড় প্রভাব আছে। কুর্মি ভোটের উপর জেডি(ইউ)-র, আর যাদব ভোটের উপর আরজেডি-র প্রভাব এখনও মোটের উপর অক্ষুণ্ণ রয়েছে। এ বার তাদের সেই ভোটব্যাঙ্কে ফাটল ধরানোর কৌশলই নিচ্ছে বিজেপি।
দলে নতুন পরিবর্তনের পর দল যে আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী হবে, সেই বিষয়ে প্রত্যয়ী রাজ্য বিজেপি। বিজেপি সভাপতি জায়সবাল এই প্রসঙ্গে বলেন, “২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ৪০টি লোকসভা আসনের মধ্যে বিজেপি অন্তত ৩৫টি আসন পাবে এবং রাজ্যের শক্তিশালী দল হিসাবে উঠে আসবে।” নতুন মহাগঠবন্ধন সরকার জনাদেশকে উপেক্ষা করে স্বার্থের দ্বারা পরিচালিত হয়েছেও বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি।