কেদারনাথের যাত্রাপথে ভূমিধসের নীচে চাপা পড়েছে একাধিক দোকান। —ফাইল চিত্র ।
কেদারনাথের যাত্রাপথে ভূমিধসের নীচে চাপা পড়ল একাধিক দোকানঘর। ধ্বংসস্তূপের নীচে অনেকের চাপা পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগ জেলার গৌরীকুণ্ডের কাছে ঘটনাটি ঘটেছে। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এসডিআরএফ) একটি দল ইতিমধ্যেই উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাতে গৌরীকুণ্ড পোস্ট ব্রিজের কাছে প্রবল বর্ষণের কারণে ভূমিধস হয়। ভূমিধসের নীচে চাপা পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশ কয়েকটি দোকান। চাপা পড়েন দোকানগুলির মালিক এবং কর্মচারীরাও। সেই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে স্থানীয়দের দাবি।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে এসডিআরএফ কর্তা দলীপ সিংহ রাজওয়ার জানিয়েছেন, ধসের নীচে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ জনের চাপা পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা খবর পেয়েছিলাম ভারী বৃষ্টিপাতের পর ভূমিধসের কারণে তিনটি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তৎক্ষণাৎ উদ্ধারকাজ শুরু হয়। দোকানগুলিতে কমপক্ষে ১০-১২ জন লোক ছিলেন। এখনও পর্যন্ত তাঁদের খুঁজে পাওয়া যায়নি।’’
রুদ্রপ্রয়াগের পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘নিখোঁজ ব্যক্তিদের খুঁজে বার করতে অভিযান শুরু হয়েছে।’’
অন্য দিকে, জোশীমঠের পর এ বার রাস্তা এবং সড়কে ফাটল ধরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল দেহরাদূনে। দেহরাদূন জেলার কালসি ব্লকের খামরোলি এবং আশপাশের এলাকায় দু’ডজনেরও বেশি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। মাটিতে ধসে গিয়েছে বেশ কয়েকটি বা়ড়ি। বৃহস্পতিবার স্থানীয়রা জানিয়েছেন, খামরোলি গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগেই সরু সরু ফাটল দেখা গিয়েছিল। কিন্তু বর্ষার মরসুমে তা চওড়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি বাড়ি মাটিতে ধসে গিয়েছে। পাজিটিলানি, টিপাউ ও সহিয়া-পাটনের মতো সড়কেও বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, পাজিতিলানি এবং চিবাউ-খামরোলির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনার আওতায় রাস্তা তৈরির জন্য খোদাই কাজ চলছিল। আর সেই জন্যই এই ফাটল তৈরি হয়েছে। খামরোলি গ্রামে প্রায় ৫০টি পরিবার বাস করে। দেহরাদূন মূল শহর থেকে ৯০ কিলোমিটারের মধ্যে এই ফাটল-আতঙ্ক দেখা গিয়েছে। যে কারণে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন দেহরাদূন এবং সংলগ্ন বেশ কয়েকটি এলাকার মানুষ।
প্রশাসনের তরফে খুব শীঘ্রই ভূমিধস এবং বাড়ি-সড়কে ফাটল ধরার কারণ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
প্রসঙ্গত, বিগত কয়েক মাস ধরে ক্রমাগত বসে যাচ্ছে গাড়োয়াল হিমালয়ের গুরুত্বপূর্ণ জনপদ জোশীমঠের জমি। ফাটল ধরছে একের পর এক বাড়ি-হোটেলে । রাস্তাতেও যেখানে-সেখানে ফাটল ধরতে দেখা গিয়েছে। মাটির তলা থেকে উঠে আসছে অদ্ভুত শব্দ। মাটি বসে যাওয়ার কারণে এ পর্যন্ত চামোলি জেলার এই শহরে প্রায় ছ’শো বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার জেরে বহু মানুষ ভিটেমাটি ছাড়া হয়েছেন। ঠাঁই নিতে হয়েছে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে। সিংধর জৈন, মাড়ওয়ারি, জেপি কলোনির মতো শহরের বেশ কিছু অঞ্চলে প্রতি দিন মাটি বসে গিয়ে নতুন করে ফাটল দেখা দিচ্ছে ঘরবাড়িতে। ফাটল দেখা গিয়েছিল রুদ্রপ্রয়াগ এবং কর্ণপ্রয়াগেও। এ বার দেহরাদূনের কাছে ঘরবাড়ি এবং সড়কে ফাটল দেখা দেওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।