NASA

মহাশূন্যে মৃত্যু হলে কী পরিণতি হয় মহাকাশচারীর দেহের? কী ভাবেই বা শেষকৃত্য? কী বলছে নাসার নিয়ম?

অভিযানে গিয়ে বেশ কয়েক বার মহাকাশযানগুলিকে দুর্ঘটনার মুখে পড়তে হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই সব দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে মহাকাশচারীদের। যেমনটা হয়েছিল, ২০০৩ সালের ১৬ জানুয়ারি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৩ ০৭:৫২
Share:
০১ ২০
According to NASA’s protocol, what will happen if someone dies in Space

বহু অজানা রহস্যের খোঁজ করতে এবং বৈজ্ঞানিক পরীক্ষানিরীক্ষা চালাতে বিগত কয়েক দশক ধরে মহাকাশে অভিযান চালাচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ। সেই দৌড়ে রয়েছে আমেরিকা, চিন, রাশিয়ার মতো দেশগুলি। তালিকায় নাম রয়েছে ভারতেরও।

০২ ২০
According to NASA’s protocol, what will happen if someone dies in Space

অভিযানে গিয়ে বেশ কয়েক বার মহাকাশযানগুলিকে দুর্ঘটনার মুখে পড়তে হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মৃত্যু হয়েছে মহাকাশচারীদের। যেমনটা হয়েছিল, ২০০৩ সালের ১৬ জানুয়ারি।

Advertisement
০৩ ২০
According to NASA’s protocol, what will happen if someone dies in Space

৭ মহাকাশচারীকে নিয়ে পাড়ি দিয়েছিল আমেরিকার মহাকাশযান কলম্বিয়া। অভিযানের নাম ছিল এসটিএস-১০৭। কিন্তু ১৫ দিনের মাথায় কাজ সেরে পৃথিবীতে ফেরার পথে ২০০৩ সালের ১৬ জানুয়ারি মহাশূন্যে ধ্বংস হয় এই যান। মৃত্যু হয় ৭ মহাকাশচারীরই। মৃত্যু হয়েছিল ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকার মহাকাশচারী এবং মহাকাশযান বিশেষজ্ঞ কল্পনা চাওলারও।

০৪ ২০

তাই মহাকাশচারীদের পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরে অভিযানে পাঠানোর ক্ষেত্রে যে পদে পদে বিপদ রয়েছে, তা বলাই বাহুল্য।

০৫ ২০

৬০ বছর আগে মহাজাগতিক অনুসন্ধান শুরু হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ২০ জন মহাকাশচারীর মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে ১৯৮৬ এবং ২০০৩ সালের নাসার পাঠানো মহাকাশযান দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন মোট ১৪ জন। ১৯৭১ সালে সয়ুজ-১১ অভিযানের সময় মৃত্যু হয়েছিল তিন মহাকাশচারীর। ১৯৬৭ সালে অ্যাপোলো-১ লঞ্চ প্যাডে আগুন লেগেও তিন মহাকাশচারীর মৃত্যু হয়।

০৬ ২০

মহাকাশে হামেশাই মানববিহীন যান পাঠাচ্ছে বিভিন্ন দেশ। তার মধ্যেই ২০২৫ সালে চাঁদে এবং ২০৩০-এর পর মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে নাসা। মহাকাশে অভিযানের সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।

০৭ ২০

সে ক্ষেত্রে যে প্রশ্ন বার বার উঠে আসে, তা হল— যদি কোনও মহাকাশচারী মহাকাশে মারা যান তা হলে তাঁর মৃতদেহের কী হবে? শেষকৃত্যই বা হবে কোন উপায়ে? কী বলছে নাসার নিয়মাবলি?

০৮ ২০

নাসার প্রোটোকল অনুযায়ী, যদি কোনও মহাকাশচারী পৃথিবীর নিম্নকক্ষে মারা যান, অর্থাৎ আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের আশেপাশে মারা যান, তা হলে তাঁর সঙ্গীরা কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই একটি ক্যাপসুলে সেই মৃতদেহ পৃথিবীতে পাঠিয়ে দিতে পারবেন।

০৯ ২০

যদি কোনও মহাকাশচারী চাঁদে মারা যান, তা হলে মাসখানেকের মধ্যেই বাকি মহাকাশচারীরা তাঁর দেহ পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে পারেন।

১০ ২০

নাসার নিয়মাবলি অনুযায়ী, মৃতদেহ সংরক্ষণ নাসার প্রধান উদ্বেগ নয়। বরং বাকি মহাকাশচারীরা নিরাপদে ফিরছেন কি না, সেই বিষয়টিই অগ্রাধিকার পায় তাদের কাছে।

১১ ২০

অন্য দিকে, ৪৮০ কোটি কিমি দূরত্ব অতিক্রম করে যদি কোনও মহাকাশচারী মঙ্গল গ্রহ অভিযানে গিয়ে মারা যান তা হলে তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না।

১২ ২০

নাসার নিয়মাবলি অনুযায়ী, সেই দেহ ফিরবে তখনই যখন দলের বাকি সদস্যরা পৃথিবীতে ফিরবেন। অর্থাৎ, মৃতদেহটি ফিরতে সময় লাগতে পারে বেশ কয়েক বছর। তত দিন পর্যন্ত মহাকাশে বিশেষ ভাবে সেই দেহটিকে সংরক্ষিত করা যেতে পারে।

১৩ ২০

মহাকাশযানের অভ্যন্তরে স্থির তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা দেহটিকে বহু দিন পর্যন্ত পচনের হাত থেকে রক্ষা করবে।

১৪ ২০

এই সব নিয়ম তখনই প্রযোজ্য হবে যখন, কোনও মহাকাশচারী মহাকাশের মধ্যে স্বাভাবিক কারণে মারা যাবেন। কিন্তু কেউ যদি মহাকাশের জন্য তৈরি উপযুক্ত পোশাক অর্থাৎ, ‘স্পেসস্যুট’ না পরার কারণে মারা যান, তা হলে?

১৫ ২০

‘স্পেসস্যুট’ না পরে মহাকাশে পা দিলে মহাকাশচারী প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মারা যাবেন। মহাশূন্যে চাপ কমে যাওয়ার জন্য এবং অক্সিজেনের অনুপস্থিতির জন্য মহাকাশচারীর পক্ষে শ্বাস নেওয়া অসম্ভব হয়ে যাবে। ফুটতে থাকবে রক্ত এবং শরীরের অন্যান্য তরল।

১৬ ২০

কোনও মহাকাশচারী যদি ‘স্পেসস্যুট’ ছাড়াই চাঁদে বা মঙ্গলে পা দেন, সে ক্ষেত্রেও একই পরিণতি হবে তাঁর।

১৭ ২০

চাঁদে প্রায় কোনও বায়ু নেই। যা আছে, তা-ও খুব সামান্য পরিমাণ। অন্য দিকে, মঙ্গল গ্রহের বায়ুমণ্ডল খুবই পাতলা। প্রায় কোনও অক্সিজেন নেই। ফলে দু’ক্ষেত্রেই নিশ্বাস নিতে না পেরে এবং রক্ত ফুটে মৃত্যু হবে মহাকাশচারীর।

১৮ ২০

কিন্তু সে ক্ষেত্রে ওই মহাকাশচারীর শেষকৃত্য কী ভাবে হবে? নাসার নিয়ম অনুযায়ী, চাঁদ বা মঙ্গলপৃষ্ঠে কোনও মহাকাশচারীর মৃত্যু হলে তাঁকে পোড়ানো বা কবর দেওয়া যাবে না।

১৯ ২০

চাঁদ বা মঙ্গলে দেহ পোড়ানোর জন্য প্রচুর পরিমাণ শক্তি এবং জ্বালানির প্রয়োজন। কিন্তু মহাকাশচারীদের কাছে সীমিত জ্বালানি থাকার কারণে তা সম্ভব নয়। আবার মৃতদেহে থাকা ব্যাকটেরিয়া বা অনুজীব চাঁদ বা মঙ্গলের মাটি নষ্ট করতে পারে ভেবে, কবরও দেওয়া যাবে না।

২০ ২০

এর ফলে মৃত মহাকাশচারীর দলের বাকি সদস্যরা পৃথিবীতে ফিরে না আসা পর্যন্ত একটি বিশেষ ব্যাগে দেহটিকে সংরক্ষণ করা হবে।

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement