দফায় দফায় ধস ও হড়পাবান দুশ্চিন্তায় ফেলেছে পরিবেশবিদদের ছবি পিটিআই।
ফের ধস হিমাচলপ্রদেশের শিমলায়। আজ সকালে শিমলার জেয়োরিতে বড়সড় ধস নেমে বন্ধ হয়ে যায় শিমলা-কিন্নৌর জাতীয় সড়ক। এই রাস্তাটি পঞ্জাবের মির্জাপুরের সঙ্গে ভারত-চিন সীমান্তে শিপকী লা-কে যু্ক্ত করে। রামপুরের কাছে এই ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর নেই বলে জানিয়েছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা কেন্দ্র।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, পাহাড় থেকে পাথরের বিরাট বিরাট চাঁই গড়িয়ে নীচে নামছে। ধুলোয় ঢেকে গিয়েছে চারপাশ। ধসের ঠিক মুখে পড়লেও একটু জন্য বেঁচে গিয়েছে কয়েকটি গাড়ি। পরিস্থিতির উপরে নজর রাখতে রামপুরের এসডিএ এবং পুলিশবাহিনী পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসন। গত ২৮ অগস্টও মান্ডি জেলায় ধস নেমে বন্ধ হয়ে যায় চণ্ডীগড়-মানালি জাতীয় সড়ক। ওই মাসেই কিন্নৌর জেলায় ধসের তলায় চাপা পড়ে মৃত্যু হয় কমপক্ষে ১৩ জনের।
হিমাচলপ্রদেশে চলতি বর্ষার শুরু থেকেই দফায় দফায় ধস ও হড়পাবান দুশ্চিন্তায় ফেলেছে পরিবেশবিদদের। একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে, গত বর্ষার তুলনায় এই মরসুমে হিমাচলে ধস নামার ঘটনা বেড়েছে ১১৬ শতাংশ এবং মেঘভাঙা বৃষ্টির মতো বিপর্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ১২১ শতাংশ। গত ১৩ জুন থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত হিমাচলপ্রদেশে ৩৫টি বড়সড় ধস নেমেছে। গত বছর যে সংখ্যাটা ছিল ১৬। ২০২০ সালে এই পার্বত্য অঞ্চলটিতে ৯টি হড়পাবান দেখা যায়। এ বছর যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭টিতে।
পরিবেশ বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, হিমাচলের পার্বত্য এলাকা এমনিই অত্যন্ত ভঙ্গুর। খাড়া ঢাল, দুর্বল মাটির বাঁধন এবং অতিরিক্ত বর্ষার কারণে অঞ্চলটিতে ক্ষয়ের মাত্রা খুবই বেশি। তার উপরে পরিবেশকে উপেক্ষা করে উন্নয়নের পথে হাঁটতে গিয়ে বিপর্যয় আরও বাড়ছে। পরিবেশ আইন না মেনে নানাবিধ প্রকল্পের জন্য কেটে ফেলা হচ্ছে অরণ্য। এর জন্য সরকারেরও ব্যর্থতাকেও দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্নৌরের জঙ্গির কাছে ৮০৪ মেগাওয়াটের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন স্থানীয় মানুষ। অভিযোগ, প্রকল্পের জন্য যে মোট জমি নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে ১৪৩.২০৯৩ হেক্টর বনভূমির অন্তর্গত।