Mahua Moitra

‘মোদী, আদানির এত ভয়’! এথিক্স কমিটির বৈঠক দু’দিন পিছিয়ে যাওয়া নিয়ে সরব সাংসদ মহুয়া

বৈঠক পিছিয়ে গিয়েছে দু’দিন। ৯ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসবে এথিক্স কমিটির ১৫ জন সদস্যের প্যানেল, যাঁদের মধ্যে বিজেপি সাংসদেরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। সেই নিয়েই এক্সে কটাক্ষ করলেন মহুয়া মৈত্র।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:১৩
Share:

মহুয়া মৈত্র। — ফাইল চিত্র।

বৈঠক পিছিয়ে যাওয়া নিয়ে এ বার এথিক্স কমিটিকে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে একহাত নিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং গৌতম আদানিকেও কটাক্ষ করেছেন। লিখলেন, ‘‘মোদী এবং আদানি এতটা ভীত!’’

Advertisement

মহুয়ার বিরুদ্ধে ‘ঘুষ নিয়ে প্রশ্ন’ করার অভিযোগে মঙ্গলবার বৈঠকে বসার কথা ছিল এথিক্স কমিটির। সূত্রের খবর ছিল, মহুয়ার বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্টের খসড়া ‘গৃহীত’ হতে পারে মঙ্গলবারই। সেই বৈঠক পিছিয়ে যায় দু’দিন। ৯ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসবে এথিক্স কমিটির ১৫ জন সদস্যের প্যানেল, যাঁদের মধ্যে বিজেপি সাংসদেরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। এ নিয়ে মহুয়া এক্সে লেখেন, ‘‘নীতি মেনে কোনও খসড়া পেশ করা হয়নি। অথচ তা ‘গ্রহণ’ করা হবে ৯ নভেম্বরের বৈঠকে। সে দিন কংগ্রেসের সাংসদের মনোনয়ন পেশের দিন রয়েছে। তিনি (এথিক্স কমিটির প্যানেলে থাকা কংগ্রেস সাংসদ) থাকতে পারবেন না জেনেই পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বৈঠক। অন্য দিকে, বিজেপি জোটসঙ্গীদের ফোন করছে, যাতে তাঁরা উপস্থিত থাকেন এবং সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে খসড়া গৃহীত হয়। মধ্যপ্রদেশের রাজ্য সভাপতিকে উড়িয়ে আনতে চার্টার্ড বিমানের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। মোদী এবং আদানি এতটা ভীত!’’

এথিক্স কমিটির মাথায় রয়েছেন বিজেপি সাংসদ বিনোদকুমার সোনকার। কমিটিতে রয়েছেন বিজেপি সাংসদ বিষ্ণুদত্ত শর্মা যিনি মধ্যপ্রদেশে বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তাঁর দিকেই ইঙ্গিত করেছেন মহুয়া।

Advertisement

গত বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর মহুয়ার বক্তব্য শুনেছে বিজেপি সাংসদ বিনোদ সোনকারের নেতৃত্বাধীন এথিক্স কমিটি। যদিও সেই শুনানি থেকে মাঝপথেই বেরিয়ে যান মহুয়া-সহ বিরোধী সাংসদেরা। ১৫ জন সদস্যের প্যানেলে ছিলেন ওই বিরোধী সাংসদেরা। তৃণমূল সাংসদ জানিয়েছিলেন, তাঁকে ‘ব্যক্তিগত এবং অনৈতিক’ প্রশ্ন করা হয়েছে। প্রশ্নের মাধ্যমে মৌখিক ভাবে তাঁর ‘বস্ত্রহরণ’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়ে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠিও দেন মহুয়া। যদিও বিজেপি সেই অভিযোগ অস্বীকার করে। সোনকার অভিযোগ করেন, মহুয়া তদন্তে ‘অসহযোগিতা’ করেছেন। বিজেপি সাংসদ অপরাজিতা ষড়ঙ্গী জানান, মহুয়া সব ধরনের শিষ্টাচারের মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন।

মহুয়া যদিও জানান, বৈঠকে তিনি গালে হাত রেখে বসেছিলেন। তা নিয়েও ‘বাজে’ কথা বলা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁরা সব কিছুই ধরছিলেন। বাজে কথা বলছিলেন।’’ এর পরেই দাঁড়িয়ে থাকা সাংবাদিকদের উদ্দেশে মহুয়া বলেন, ‘‘ওঁরা বলেন, ‘আপনার চোখে জল’। আমার চোখে কি জল? আপনারা দেখতে পারছেন?’’ অন্য এক বিরোধী সাংসদ বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসার প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এটা অতিরিক্ত ছিল।’’

মহুয়াকে যে ভাবে প্রশ্ন করা হয়েছে, তা নিয়ে সরব হয়েছেন বিএসপির সাংসদ দানিশ আলি। সূত্রের খবর, মহুয়া রাতে কোন হোটেলে ছিলেন, কার সঙ্গে কথা বলেছেন, এ ধরনের ‘ব্যক্তিগত’ বিষয়েও প্রশ্নও করেছেন কমিটির প্রধান সোনকার। যদিও কমিটির তরফে সোনকার জানান, আরও প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার জন্যই বেরিয়ে যান। তিনি এ-ও দাবি করেছেন, মহুয়া বৈঠকে কিছু ‘আপত্তিকর শব্দ’ ব্যবহার করেছেন।

বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের অভিযোগের ভিত্তিতে শুনানি করছে লোকসভার এথিক্স কমিটি। দুবের অভিযোগ, দুবাইয়ের শিল্পপতি দর্শন হীরানন্দানির কাছ থেকে টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন করেছেন মহুয়া। নিশানা করেছেন শিল্পপতি গৌতম আদানি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। স্পিকারকে চিঠি দিয়ে মহুয়ার সাসপেনশনের দাবিও তোলেন তিনি। এর পরেই হীরানন্দানি হলফনামা দিয়ে জানান, মহুয়ার সংসদের লগ ইন আইডি জেনে তাতে প্রশ্ন পোস্ট করতেন তিনি। তবে ঘুষের অভিযোগ মানেননি। মহুয়াও নিজের লগ ইন আইডি দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ মানেননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement