তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।
অর্থের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করেছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র— বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুবে এবং বিপক্ষের আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদরাইয়ের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া। শুক্রবার দিল্লি হাই কোর্টে সেই মামলার শুনানিতে তৈরি হল নাটকীয় পরিস্থিতি। আদালতের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট মামলা থেকে সরেই যেতে হল মহুয়ার আইনজীবী গোপাল শঙ্করনারায়ণকে। অভিযোগ, আদালতের বাইরে তিনি বিপক্ষের আইনজীবীর সঙ্গে মধ্যস্থতার চেষ্টা করেছেন। শুক্রবার ভরা এজলাসে বিপক্ষের আইনজীবী দেহদরাই যখন এই অভিযোগ করেন, তখন তা অস্বীকার করেননি আইনজীবী শঙ্করনারায়ণ। যা ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।
তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগ ঘিরে উত্তাল দেশের রাজনীতি। মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজ করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত। তার পাল্টা নিশিকান্তের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেছেন মহুয়া। তাতে জুড়েছেন তাঁর প্রাক্তন বন্ধু আইনজীবী দেহদরাইকেও। আগামী ৩১ অক্টোবর দিল্লি হাই কোর্টে ওই মামলার শুনানি হওয়ার কথা। তার আগে ওই মামলা থেকে সরানো হল মহুয়ার আইনজীবীকে। শুক্রবার আদালতে নিশিকান্তের আইনজীবী দেহদরাই দাবি করেন, বৃহস্পতিবার রাতে মহুয়ার আইনজীবী তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁকে নাকি তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতে বলা হয়। এ-ও বলা হয়, মামলা প্রত্যাহার করে নিলে তাঁর পোষ্য কুকুর হেনরিকেও ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে বলে বলা হয়।
উল্লেখ্য, আইনজীবী দেহদরাই এক সময় মহুয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন। কিন্তু তিনিই একটি অভিযোগ জানিয়েছেন, শিল্পপতি দর্শন হীরানন্দানি এবং মহুয়া মিলে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করেছেন। অন্য দিকে, মহুয়ার আইনজীবীর বিরুদ্ধে এই ‘মধ্যস্থতার চেষ্টার’ অভিযোগের বিষয়ে তাঁকে বিচারপতি শচীন দত্ত প্রশ্ন করায় তিনি জানান, মহুয়া এবং জয় অনন্ত যে হেতু পরস্পরকে ব্যক্তিগত ভাবে চেনেন, সেই সূত্রেই তিনি কথা বলেছেন। যা শুনে তাঁকে ভর্ৎসনা করে আদালত। বিচারপতি দত্ত বলেন, ‘‘আমি সত্যিই আতঙ্কিত। আপনি এমন এক জন, যিনি তাঁর সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রাখবেন বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু আপনি তো বিবাদী পক্ষের সঙ্গে বাইরে যোগাযোগ করেছেন... তার মানে আপনি মধ্যস্থতার ভূমিকায় ছিলেন।’’ মহুয়ার আইনজীবীকে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনি কি মনে করেন যে, আপনি এই মামলায় আর উপস্থিত হতে পারেন?’’ যার প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট মামলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান আইনজীবী শঙ্করনারায়ণ।