তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। ফাইল চিত্র।
সুকুমার রায়ের ‘হযবরল’-তে এক জন সব কিছুর নামকরণ করত। সে বাড়ির নাম ‘কিংকর্তব্যবিমূঢ়’ রাখার সঙ্গে সঙ্গে গোটা বাড়িটাই ভেঙে পড়েছিল।
নরেন্দ্র মোদী সরকার দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত রাজপথের নাম বদলে ‘কর্তব্য পথ’ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে আজ তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র কটাক্ষ করে বললেন, ‘‘আশা করি এ বার প্রধানমন্ত্রীর নতুন বাসভবনের নাম ‘কিংকর্তব্যবিমূঢ় মঠ’ রাখা হবে।’’
রাজপথ ও তার দু’পাশের সেন্ট্রাল ভিস্টা ঢেলে সাজানোর প্রকল্পের অধীনেই প্রধানমন্ত্রীর নতুন বাসভবন তৈরি হবে। আপাতত আগামী বৃহস্পতিবার বিকেলে শুধু নতুন করে সাজানো রাজপথের উদ্বোধন করবেন মোদী। তার জন্য সে দিন দুপুরের পর থেকেই সমস্ত সরকারি অফিসে ছুটি দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে, যেমন প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে করা হয়। তার আগেই রাজপথের নাম বদলে ‘কর্তব্য পথ’ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ কংগ্রেস অভিযোগ তুলেছে, মোদী নতুন কিছুই করতে পারেন না। আগের কংগ্রেস বা অন্যান্য সরকার যে সব তৈরি করে গিয়েছে, যে সব প্রকল্প চালু করে গিয়েছে, শুধু সে সবের নতুন নামকরণ করেন।
কংগ্রেসের অভিযোগ, মোদী ক্ষমতায় এসে ইউপিএ জমানার অন্তত ২৫টি প্রকল্প নতুন নাম দিয়ে চালু করেছেন। বিভিন্ন শহরের নাম বদলেছেন। যেমন জাতীয় কারখানা উৎপাদন নীতি-র নাম বদলে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ করেছেন। নির্মল ভারত অভিযানের নাম বদলে স্বচ্ছ ভারত অভিযান করেছেন। এ বার তিনি খাস দিল্লিতে ব্রিটিশদের তৈরি রাস্তার নতুন নামকরণ করে কৃতিত্ব নিতে চাইছেন। কংগ্রেস নেতা তারিক আনোয়ারের বক্তব্য, ‘‘মোদী আসলে নতুন কিছু করে দেখাতে পারেন না। উনি চাইলে নতুন সড়ক তৈরি করে, নতুন শহর তৈরি করে তার নাম কর্তব্য পথ বা কর্তব্য নগর রাখতে পারতেন। তার বদলে কংগ্রেস বা আগের সরকারের কাজের নতুন নামকরণ করছেন।’’ মোদী জমানায় ইলাহাবাদ থেকে মোগলসরাই— বহু নাম বদল করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা প্রমোদ তিওয়ারি বলেন, ‘‘এটা আসলে মোদীজির অসুখ, যার কোনও চিকিৎসা নেই। উত্তরপ্রদেশে উনি শহরের নাম, রেলস্টেশনের নাম বদলে দিচ্ছেন। কিন্তু রাজপথের সঙ্গে যে ইতিহাসের নাম জড়িয়ে রয়েছে, তার কী হবে?’’