কংগ্রেসকে বিদ্রুপ করতে গিয়ে মহাত্মা গাঁধী সম্পর্কে চরম বিতর্কিত এক মন্তব্য করে বসলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। গাঁধী ছিলেন একজন ‘চতুর বেনিয়া’- অমিত শাহের এই মন্তব্যের পরই শুরু হয়ে গিয়েছে প্রবল সমালোচনা। অবিলম্বে তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি তুলেছে কংগ্রেস।
আগামী বছরের বিভিন্ন বিধানসভার উপনির্বাচন এবং ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে দেশ জুড়ে সফর শুরু করেছেন বিজেপি সভাপতি। শুক্রবার ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরে ছত্তীসগঢ়ের বিশিষ্ট জনেদের নিয়ে এক সভায় এ কথা বলেন তিনি। কংগ্রেস-মুক্ত ভারতের পক্ষে সওয়াল করে অমিতের তোপ, শুধু আজ নয়, কোনও দিনই কংগ্রেসের কোনও নীতি ছিল না। এ প্রসঙ্গে কংগ্রেসের জন্মের সময়ের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “কংগ্রেস কোনও নীতিগত অবস্থান, কোনও একটা নীতিগত সিদ্ধান্তের উপর দাঁড়িয়ে তৈরি হয়নি। ওটা স্বাধীনতা অর্জনের জন্য একটা বিশেষ সওয়ার ছিল মাত্র।” শাহের মতে মহাত্মা গাঁধী এটা বুঝতেন। তাঁর কথায়, “এই জন্যই মহাত্মা গাঁধী দূরদর্শিতার সঙ্গে, খুব চতুর বেনিয়া ছিলেন উনি, বুঝতে পেরেছিলেন ভবিষ্যত্ কী হতে যাচ্ছে। এই জন্যই স্বাধীনতার পর কংগ্রেসকে ভেঙে দেওয়ার কথা বলেছিলেন তিনি। তিনি তা করেননি, কিন্তু কিছু লোক এখন কংগ্রেসের সেই ভরাডুবি ঘটনোর কাজটাই শেষ করছেন।”
গাঁধী সম্পর্কে অমিত শাহের এই ‘চতুর বেনিয়া’ মন্তব্যের জন্য তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি তুলেছে কংগ্রেস। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজওয়ালা এক বিবৃতি দিয়ে বলেন, “বিজেপি সভাপতি ব্যবসায়ী বলে বিদ্রুপ করেছেন মহাত্মা গান্ধীকে, স্বাধীনতা সংগ্রামকে এবং যাঁরা স্বাধীনতার জন্য লড়েছেন- তাঁদের সবাইকে।” সুরজওয়ালা আরও বলেন, “সত্যিটা এটাই যে, স্বাধীনতার আগে ব্রিটিশরা (হিন্দু) মহাসভা এবং সঙ্ঘকে দেশভাগের জন্য বিশেষ সওয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছিল। এবং স্বাধীনতার পর, বিজেপির লোকেরা সেই পথ অনুসরণ করেই কিছু ধনী ব্যবসায়ীর বিশেষ সওয়ার হয়ে উঠেছেন।”
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি ভোট, ফের বেসুরো উদ্ধব
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক টুইট বার্তায় প্রতিক্রিয়া দেন, ‘‘জনসমক্ষে জাতীয় আইকনদের প্রসঙ্গে মন্তব্য করার আগে যথেষ্ট শ্রদ্ধা এবং সম্মান প্রদর্শন করা হচ্ছে কি না তা মাথায় রাখা উচিত আমাদের।’’ পরে শিলিগুড়িতে দাঁড়িয়ে মমতা অমিত শাহের এই মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবি তোলেন। দেশের সামনে বিজেপি সভাপতির ক্ষমা চাওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।