প্রতীকী ছবি।
করোনার কারণে লকডাউনে দীর্ঘদিন বন্ধ স্কুল। পড়াশোনা এগোতে ভরসা শুধু অনলাইন ক্লাস। তবে ইন্টারনেট পরিষেবা রয়েছে এমন জায়গায় পৌঁছতেই রোজ ৫০কিলোমিটার পাড়ি দিতে হচ্ছিল মহারাষ্ট্রের উপকূলবর্তী জেলা রত্নাগিরির প্রত্যন্ত গ্রামগুলির কমপক্ষে ২০০জন পড়ুয়াকে। শেষমেশ নিজেদের দুর্দশার কথা জানিয়ে জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের (এনসিপিসিআর) দ্বারস্থ হয় এক ছাত্র। অভিযোগ পেয়ে সমস্যার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে তারা যথাসাধ্যে চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান প্রিয়াঙ্ক কানুনগো। নেটওয়ার্ক সংস্থাগুলির সঙ্গেও তারা যোগাযোগ করেছেন বলে জানান তিনি। চিঠি পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসককেও।
ইন্টারনেট পরিষেবার বেহাল দশা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নাজেহাল মহারাষ্ট্রের উপকূলবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দারা। তার উপর জুন মাসের গোড়ায় ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ আছড়ে পড়ায় ব্যাপক ভাবে ব্যাহত হয় পরিষেবা। ইন্টারনেট তো বটেই, মোবাইল নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখে দেয়। বেশির ভাগ এলাকাতেই পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ। মাসখানেক কেটে যাওয়ার পরেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় সমস্যায় পড়েছিলেন গ্রামবাসীরা। সবচেয়ে বেশি মাসুল দিতে হচ্ছিল পড়ুয়াদেরই। অনলাইন ক্লাস করতে নিয়মিত দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে বাধ্য হচ্ছিল গ্রামগুলির কমপক্ষে ২০০ জন ছাত্রছাত্রী।
অভিযোগ পাওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসককে লেখা চিঠিতে বিষয়টির দ্রুত নিষ্পত্তি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে। মোবাইল এবং ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করতেও বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলা আধিকারিকদের। দ্রুত পরিষেবা স্বাভাবিক করার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে তাঁদের। পাশাপাশি শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে যাতে শিশুদের কোনও রকম সমস্যার মুখোমুখি না হতে হয়, তার দিকেও গুরুত্ব দেওয়ার কথা লেখা হয়েছে ওই চিঠিতে।
আরও পড়ুন: কাল বাঁচতে হলে আজ সরব হতেই হবে, ডাক প্রশান্তের
কমিশনের হস্তক্ষেপের পরে ইতিমধ্যেই ওই অঞ্চলে তাদের পরিষেবা স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানিয়েছে নেটওয়ার্ক প্রদানকারী সংস্থাগুলির মধ্যে একটি। বাকিরা দ্রুত তাদের পরিষেবা চালু করার আশ্বাস দিয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান কমিশনের চেয়ারম্যান। এনসিপিসিআর-এর হস্তক্ষেপের ফলেই সংস্থাগুলি বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে দেখতে বাধ্য হয়েছে বলেও জানান তিনি। বর্তমান সময়ে যখন বেশির ভাগ শিক্ষাই অনলাইনের মাধ্যমে হচ্ছে তখন শিশুদের জন্য নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট পরিষেবা নিশ্চিত করতেই হবে বলে মত তাঁর।
লকডাউনের জেরে মার্চের শেষ থেকেই আরও বেশি করে ইন্টারনেট নির্ভর হয়ে উঠেছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা। এতে আরও বেশি সমস্যায় পড়েছে প্রত্যন্ত এলাকার পড়ুয়ারা— এমনটাই দাবি করা হয়েছে এক সমীক্ষায়। যথাযথ ইন্টারনেট পরিষেবা না-থাকাই এর মূল কারণ বলে দাবি তাদের।