ফািল চিত্র।
অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়ের পরে মহারাষ্ট্র। সিবিআই-কে দেওয়া ‘জেনারেল কনসেন্ট’ প্রত্যাহার করে নিল বিরোধী-শাসিত আরও একটি রাজ্য। অর্থাৎ, এ বার থেকে মহারাষ্ট্রে কোনও তদন্ত চালাতে হলে রাজ্য সরকারের কাছে আগাম অনুমতি নিতে হবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটিকে। গত কালের এই নির্দেশে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের সঙ্গে শিবসেনা-কংগ্রেস-এনসিপি জোটের মহারাষ্ট্র সরকারের সংঘাত নতুন মাত্রা পেল বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে যে মামলাগুলির তদন্ত ইতিমধ্যেই সিবিআই করছে, তার উপরে এই নির্দেশের প্রভাব পড়বে না।
অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর তদন্ত ঘিরে আগেই মুম্বই পুলিশের সঙ্গে কেন্দ্রের এক প্রস্ত দ্বন্দ্ব বেধেছে। বিহার সরকারের সুপারিশে ওই মামলার তদন্তভার শেষ পর্যন্ত সিবিআইয়ের হাতে গিয়েছে। এ বারের সংঘাতের কেন্দ্রে রয়েছে ভুয়ো টিআরপি-র তদন্ত। এই তদন্তে ইতিমধ্যেই অর্ণব গোস্বামীর ‘রিপাবলিক টিভি’ এবং আরও দু’টি স্থানীয় চ্যানেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিল মুম্বই পুলিশ। গত কাল উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সুপারিশে লখনউয়ে টিআরপি দুর্নীতির আরও একটি অভিযোগের তদন্তভার নেয় সিবিআই। তার পরেই উদ্ধব ঠাকরে সরকার ওই নির্দেশ দেয়।
আজ মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ জানান, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সিবিআইয়ের অপব্যবহার রুখতেই এই পদক্ষেপ করেছে রাজ্য। দেশমুখ বলেন, ‘‘আমাদের মনে হয়েছে, সিবিআইয়ের মাধ্যমে রাজনৈতিক হিসেব-নিকেশ মেটানো হচ্ছে। তাদের ব্যবহার করে টিআরপি-কাণ্ডের তদন্তে নাক গলানোর বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। তাই ওই অনুমতি প্রত্যাহার করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের এক বিচারপতি কয়েক বছর আগে সিবিবিআকে ‘খাঁচার তোতা’ বলেছিলেন। আমরা তা হতে দিতে চাই না।’’ শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত বলেন, ‘‘জাতীয় ক্ষেত্রে তদন্তের এক্তিয়ার সিবিআইয়ের রয়েছে। কিন্তু সংবিধানে মহারাষ্ট্র এবং মহারাষ্ট্র পুলিশের নিজস্ব অধিকার রয়েছে। কেউ তা খর্ব করতে চাইলে সরকারকে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতেই হবে।’’
সূত্রের বক্তব্য, ভুয়ো টিআরপি নিয়ে লখনউয়ের হজরতগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিল একটি বিজ্ঞাপন সংস্থা। সেই তদন্তই উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে। কাজেই অদূর ভবিষ্যতে মুম্বই পুলিশের তদন্তও মোদী সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন সিবিআইয়ের হাতে চলে যেতে পারে, এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দিতে পারছে না উদ্ধব সরকার। বস্তুত, চর্চাও শুরু হয়ে গিয়েছে তা নিয়ে। ফলে এটিই ‘জেনারেল কনসেন্ট’ প্রত্যাহারের আসল কারণ বলে সূত্রটির মত।