গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
সরকার গড়তে যে তাঁরা দরকষাকষির পথেই রয়েছেন, সেটা বুঝিয়ে দিয়ে শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত মঙ্গলবার জানিয়ে দিলেন, শরদ পওয়ারের দল ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি)-র সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ রাখছেন ঠিকই, তবে সমঝোতা হলে পওয়ার মুখ্যমন্ত্রী হবে না। মুখ্যমন্ত্রী হবেন শিবসেনারই কোনও নেতা। ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর দু’সপ্তাহ হতে চলল। কিন্তু কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন মহারাষ্ট্রে, বিজেপি আর শিবসেনার দ্বৈরথে, তা এখনও চূড়ান্ত হল না।
একই সঙ্গে, নির্বাচনী লড়াইয়ের শরিক শিবসেনাকে দূরে রেখে বিজেপির সরকার গড়ার প্রস্তুতিকে কটাক্ষ করে এ দিন উদ্ধব ঠাকরের দল বলেছে, ‘‘শপথ অনুষ্ঠান কারও ব্যক্তিগত ব্যাপার নয়। সেটা জনগনের অধিকার।’’ চলতি বিধানসভার মেয়াদ ফুরচ্ছে তিন দিন পর, শনিবার।
শিবসেনার রাজ্যসভা সদস্য সঞ্জয় রাউত মঙ্গলবার বলেছেন, ‘‘শিবসেনার থেকেই কেউ মুখ্যমন্ত্রী হবেন। আপনারা দেখতে পাবেন, মহারাষ্ট্র রাজনীতির মুখ বদলে গিয়েছে। যাকে আপনারা হাঙ্গামা বলে মনে করছেন, সেটা হাঙ্গামা নয়। তা আসলে ন্যায় ও অধিকার আদায়ের লড়াই। জয়টা আমাদেরই হবে। আর শরদ পওয়ার তো দিল্লির বড় মাপের নেতা। ওঁকে মহারাষ্ট্রে টেনে আলছেন কেন?’’
বিজেপির সঙ্গে সরকার গড়ার জন্য শিবসেনা ইতিমধ্যেই শর্ত দিয়েছে, পাঁচ বছরের মধ্যে আড়াই বছর ভাগাভাগি করে দু’দলের তরফে মুখ্যমন্ত্রী হবেন। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব যা এখনও মেনে নেয়নি।
আরও পড়ুন- ‘মহারাষ্ট্রে সরকার গড়ার দায় বিজেপির’, বল ঠেললেন পওয়ার, দৌড়ে নেই কংগ্রেসও
আরও পড়ুন- মহারাষ্ট্রে আরও সুর চড়াচ্ছে শিবসেনা
সমস্যার জট কী ভাবে খোলা যায়, তা নিয়ে সোমবার দু’-দু’টি বৈঠক হয়েছে দিল্লিতে। একটি বৈঠক হয়েছে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসের সঙ্গে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের। অমিত দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছিলেন ফডণবীসকে। অন্য বৈঠকটি হয়েছে এনসিপি নেতা শরদ পওয়ারের সঙ্গে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর।
দিল্লির রাজনৈতিক মহলের খবর, সরকার গড়তে এনসিপি-র সঙ্গে শিবসেনার বোঝাপড়া হলে কংগ্রেস যে উদ্ধব ঠাকরের দলকে সমর্থন করবে না, শরদকে তা জানিয়ে দিয়েছেন সনিয়া। ও দিকে, ফডণবীসের সঙ্গে অমিতের বৈঠকের পর শিবসেনার সঙ্গে মধ্যস্থতার জন্য দলের প্রবীণ নেতা নিতিন গডকড়ীকে মুম্বই পাঠাচ্ছে বিজেপি।
তবে শিবসেনা নেতা রাউত এ দিন বলেছেন, ‘‘মহারাষ্ট্রে কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, সেটা দিল্লি ঠিক করবে না। সেটা মহারাষ্ট্রেই চূড়ান্ত হবে।’’ তিনি এও বলেছেন, ‘‘শিবসেনা সভাপতি উদ্ধব ঠাকরে চান রাজ্যে একটা স্থায়ী সরকার গঠিত হোক। তাই মিথ্যা বলব না, আমি শরদ পওয়ারের সঙ্গে কথা বলেছি। এটা কোনও অপরাধ নয়। আমরা আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি। স্থায়ী সরকার গড়ার উদ্দেশেই আমরা রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেছিলাম।’’
অক্টোবরের নির্বাচনে ২৮৮ সদস্যের মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বিজেপি পেয়েছে ১০৫টি আসন। শিবসেনা ৫৬টি। এনসিপি এবং কংগ্রেস পেয়েছে যথাক্রমে ৫৪টি ও ৪৪টি আসন।