চাপানউতোর অব্যাহত মহারাষ্ট্রে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গিয়েছে শনিবার মধ্যরাতেই। অথচ এখনও পর্যন্ত সমঝোতায় আসতে পারেনি বিজেপি-শিবসেনা। এমন পরিস্থিতিতে বৃহত্তম দল বিজেপিকেই মহারাষ্ট্রে সরকার গড়তে আহ্বান জানালেন রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারি। শনিবার নির্ধারিত সময় পেরনোর আগেই ‘কেয়ারটেকার মুখ্যমন্ত্রী’ দেবেন্দ্র ফডণবীসকে চিঠি লিখে সরকার গঠন প্রক্রিয়া শুরু করতে অনুরোধ জানান তিনি।
শনিবার রাতেই রাজভবনের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, ‘গত ২১ অক্টোবর মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। ফলাফল ঘোষণা হয়েছে ২৪ অক্টোবর। তার ১৫ দিন পরও কোনও একটি দল বা জোট সরকার গঠনের দাবি নিয়ে এগিয়ে আসেনি। তাই রাজ্যপালকে পদক্ষেপ করতে হয়েছে। বৃহত্তম দল বিজেপিকে সরকার গঠনের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।’
সংবাদমাধ্যমে রাজ্যপালের চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন মহারাষ্ট্র বিজেপির সভাপতি চন্দ্রকান্ত পাটিল। তিনি বলেন, “রাজ্যপালের চিঠি পেয়েছি আমরা। রবিবার এ নিয়ে বৈঠক করবে আমাদের কমিটি। এর পর কী করা হবে, তা সেখানেই ঠিক হবে।’’
আরও পড়ুন: অযোধ্যাতেই বিকল্প ৫ একরে মসজিদ, মন্দির বিতর্কিত জমিতে
অন্য দিকে, এখনও ৫০:৫০ ফর্মুলায় অনড় শিবসেনা। মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়া অন্য কোনও কিছু নিয়ে আলোচনায় রাজি নয় তারা। তবে রাজ্যপাল নিজে থেকে এই পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছেন দলের নেতা সঞ্জয় রাউত। তাঁর কথায়, ‘‘সরকার গঠন নিয়ে অন্তত রাজ্যপাল তো পদক্ষেপ করলেন! বিজেপি বৃহত্তম দল, তাই সরকার গঠনের ওদেরই প্রথম দাবি জানানো উচিত।’’
তবে মুখে এ কথা বললেও, বিজেপিকে বিপাকে ফেলতেই সঞ্জয় তথা শিবসেনা এমন কথা বলছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের মতে, সরকার গঠন করলেও বিধানসভায় আস্থাভোটে নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে বিজেপিকে। কিন্তু তার জন্য প্রয়োজনীয় আসনসংখ্যা নেই তাদের কাছে। তাই শিবসেনার ধারণা, শেষমেশ হয়তো তাদের দাবি মেনেই নেবে বিজেপি। আর যদি তা না হয়, সে ক্ষেত্রে কংগ্রেস এবং এনসিপির সঙ্গে আলোচনার রাস্তা খোলাই রয়েছে, যার মধ্যে আস্থাভোটে বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার কথা ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে এনসিপি। দলের মুখপাত্র নবাব মালিক বলেন, ‘‘আস্থাভোট হলে বিজেপির বিরুদ্ধেই ভোট দেব আমরা। শিবসেনাও যদি সেই পথে হাঁটে, সে ক্ষেত্রে অন্য উপায়ের কথা ভাবব আমরা।’’
আরও পড়ুন: ওয়াকফ বোর্ড মানল, ওয়াইসি, ল বোর্ড অসন্তুষ্ট
২৮৮ আসনের মহারাষ্ট্র বিধানসভায় ম্যাজিক ফিগার ১৪৫। এ বারের নির্বাচনে ১০৫টি আসনে জয়লাভ করেছে বিজেপি। শিবসেনা পেয়েছে ৫৬টি আসন। এনসিপি ও কংগ্রেস পেয়েছে যথাক্রমে ৪৪ এবং ৫৪টি করে আসন। তাই সরকার গঠনের ক্ষেত্রে দীর্ঘ দিনের সঙ্গী শিবসেনার হাত ধরা ছাড়া উপায় নেই বিজেপির। ঘোড়া কেনাবেচার আশঙ্কায় আগেভাগে দলের বিধায়কদের মাড আইল্যান্ডের একটি রিসর্টে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে শিবসেনা। পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে আদিত্য ঠাকরে নিজেও সেখানে রাত কাটিয়েছেন।