রাজভবনের বাইরে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোটের প্রতিনিধিরা। ছবি: পিটিআই।
আস্থাভোট নিয়ে আগামী কাল মঙ্গলবার রায় শোনাবে সুপ্রিম কোর্ট। তার মধ্যেই মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের দাবি জানাল শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট। সোমবার সকালে এক দিকে শীর্ষ আদালতে যখন শুনানি চলছে, তখনই রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারীর সঙ্গে দেখা করতে রাজভবন পৌঁছন তিন দলের প্রতিনিধিরা। মোট ১৬২ জন বিধায়কের সই-সমেত চিঠি জমা দেন তাঁরা। বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাতারাতি সরকার গঠন করা অজিত পওয়ার এবং তাঁকে সমর্থন দেওয়া ২ বিধায়ক, আন্না বনসোদ এবং নরহরি ঝিরওয়াল ছাড়া ৫১ জন এনসিপি বিধায়কই ওই চিঠিতে সই করেন বলে জানা গিয়েছে।
২৮৮ আসনের মহারাষ্ট্র বিধানসভায় ম্যাজিক সংখ্যা ১৪৫। বিধানসভা নির্বাচনে ৫৬টি আসনে জয়ী হলেও, জোটের পক্ষে ৭ নির্দল বিধায়ক সমেত মোট ৬৩ জনের সমর্থনের সই জমা দিয়েছে শিবসেনা। কংগ্রেসের পক্ষে ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন ৪৪ জন বিধায়ক। অজিত পওয়ারের সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারে অংশ নেওয়া ৩ বিধায়ক ছাড়া এনসিপির ৫১ জন বিধায়ক তাতে সই করেছেন।
এর পাশাপাশি, শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোটের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে সমাজবাদী পার্টিও। তাদের দুই বিধায়ক ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেন।
আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রের আঁচ সংসদে, ‘গণতন্ত্রের হত্যা’ লোকসভায় বললেন রাহুল, ভিতরে বাইরে বিক্ষোভ কংগ্রেসের
এখনও অবশ্য নিজেদের অবস্থানেই অনড় বিজেপি। এনসিপি এবং নির্দল বিধায়ক সমেত তাদের পক্ষে ১৭০ জনের সমর্থন রয়েছে বলে এ দিনও আদালতে জানায় তারা। জবাবে ১৫৪ জনের স্বাক্ষর-সহ আদালতে এফিডেভিট জমা দেয় শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট। বলা হয়, বাকি ৮ জন এখনও এসে পৌঁছননি।
অন্য দিকে, শরদ পওয়ার এখনও দাবি করছেন, অজিত পওয়ার ছাড়া বাকি ৫৩ জন বিধায়কের সমর্থনই তাঁদের সঙ্গে রয়েছে। শিবসেনার সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গড়তে যে চিঠি তৈরি করা হয়েছিল, সকলকে অন্ধকারে রেখে তাতেই দলীয় বিধায়কদের সই করিয়ে নেন অজিত। কিন্তু আসল সত্যি জানতে পেরে সকলে ফিরে এসেছেন। গুরুগ্রামের একটি হোটেলে এনসিপি-র ওই বিধায়কদের বন্দি করে রাখা হয়েছিল, কিন্তু সেখান থেকে তাঁদের উদ্ধার করে আনা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন সেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত। তাঁর দাবি, এই মুহূর্তে মাত্র ২ জন বিধায়ক রয়েছেন অজিত পওয়ারের সঙ্গে।
আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে কী হবে, কাল সকাল সাড়ে ১০টায় রায় দেবে সুপ্রিম কোর্ট
মূলত মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়েই বিজেপির সঙ্গে দীর্ঘ তিন দশকের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে শিবসেনার। কিন্তু অজিত পওয়ার এবং এনসিপি বিধায়কদের দলে টানতে সেই বিজেপির তরফে সেই মুখ্যমন্ত্রী পদের টোপই দেওয়া হয় বলেও দাবি করেন রাউত। তাঁর অভিযোগ, অজিত পওয়ারকে আড়াই বছরের মুখ্যমন্ত্রিত্বের লোভ দেখানো হয়েছিল। রাজ্য মন্ত্রিসভায় ২০টি আসন দেওয়া হবে বলে লোভ দেখানো হয়েছিল এনসিপি বিধায়কদেরও।