আরও কাছাকাছি শিবসেনা-কংগ্রেস

অভিন্ন কর্মসূচির খসড়া প্রস্তুতিতে আজ ফের একপ্রস্ত বৈঠকে বসেন এনসিপি ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। তখনই কংগ্রেস নেতা পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, সব কিছু ঠিক ভাবে এগোলে আজই শিবসেনার সঙ্গে বৈঠকে বসে রূপরেখা চূড়ান্ত করে ফেলবে দু’দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:৪০
Share:

সনিয়া গাঁধী ও উদ্ধব ঠাকরে। —ফাইল চিত্র

শিবসেনা মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস ও এনসিপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়ার প্রক্রিয়ায় গতি আনতেই তৎপর হয়ে উঠল আয়কর দফতর। আজ শিবসেনা-বিজেপি জোটের হাতে থাকা বৃহম্মুম্বই পুরসভার বিভিন্ন প্রকল্পের আর্থিক গরমিলের খোঁজে নামে আয়কর দফতর। এরই মধ্যে সরকার গড়ার প্রক্রিয়া আরও এক ধাপ এগিয়ে অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি তৈরির লক্ষ্যে আজ বিকালে বৈঠকে বসে তিন দল। প্রাথমিক খসড়া নিয়ে আলোচনার জন্য রবিবার দিল্লিতে সনিয়া গাঁধীর বাড়িতে বৈঠকে বসতে চলেছেন এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার। তার পরেই খসড়া নিয়ে শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সনিয়া-শরদেরা।

Advertisement

অভিন্ন কর্মসূচির খসড়া প্রস্তুতিতে আজ ফের একপ্রস্ত বৈঠকে বসেন এনসিপি ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। তখনই কংগ্রেস নেতা পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, সব কিছু ঠিক ভাবে এগোলে আজই শিবসেনার সঙ্গে বৈঠকে বসে রূপরেখা চূড়ান্ত করে ফেলবে দু’দল। সেই মতো আজ সন্ধ্যায় মুম্বইয়ে বৈঠকে বসে তিন দল। সূত্রের খবর, তিন দলের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রিত্ব ও মন্ত্রক বণ্টন ছাড়া বাকি বিষয়গুলি নিয়ে অনেকাংশে একমত হয়েছে দলগুলি। আজ রাতে কংগ্রেস সূত্র থেকে দাবি করা হয়েছে, ইতিবাচক বৈঠক হয়েছে তিন দলের। সরকার গড়ার প্রক্রিয়া জারি রয়েছে।

তিন দলের সরকার গড়া নিয়ে মহারাষ্ট্র যখন সরগরম, তখন আজ বৃহম্মুম্বই পুরসভার বিভিন্ন প্রকল্পের আর্থিক গরমিল তদন্তে নতুন করে গতি আনে আয়কর দফতর। সম্প্রতি পুরসভার কিছু প্রকল্পের অর্থ অন্য প্রকল্পে খরচ করার অভিযোগ উঠেছিল শিবসেনা ঘনিষ্ঠ কিছু ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। শুরু হয়েছিল তদন্ত। যদিও ভোটের কারণে ওই তদন্ত বেশ কিছু দিন বন্ধ থাকে। আজ নতুন করে তদন্তে নেমে অভিযুক্ত ঠিকাদারদের জেরা করে আয়কর দফতরের কর্তারা। বিধানসভা ভোটের পরে শিবসেনা রাজ্যে বিরোধী জোটের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়ার তৎপরতা শুরু করার পরেই ওই আয়কর তল্লাশি আসলে বিজেপির প্রতিহিংসার রাজনীতি বলে অমিত শাহের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে উদ্ধবের দলের নেতারা।

Advertisement

গত কালই অমিত মুখ্যমন্ত্রী পদের ভাগাভাগি প্রসঙ্গে দাবি করেছিলেন, উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে এ নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। তাঁর পাল্টা দাবি, শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলে এসেছেন জোট সরকারের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হবেন দেবেন্দ্র ফডণবীস। আজ বিজেপি নেতা রাম মাধবও সরকার না-গড়তে পারার দায় শিবসেনার উপরে চাপিয়ে দাবি করেন, ভোটের ফল দেখে নতুন শর্ত চাপান উদ্ধবেরা। পাল্টা জবাবে শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্নে অমিত শাহ এমন কোনও বিবৃতি দিয়েছেন বলে আমি শুনিনি। আমার ধারণা উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে সে দিন কী আলোচনা হয়েছিল, তা প্রধানমন্ত্রীকে জানাননি অমিত শাহ। জানালে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হত না।’’

ফল প্রকাশের ১৮ দিনেও কোনও দল সরকার গড়তে না পারায় পরশু মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করেন রাজ্যপাল। বাড়তি সময় চেয়েও পায়নি শিবসেনা নেতৃত্ব। আজ রাজ্যপালের সেই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে রাউত বলেন, ‘‘গোটা পর্বটাই নাটক বলে মনে হয়েছে, যা কোনও অদৃশ্য শক্তি দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করছিল।’’ অমিত শাহের সমর্থনে মুখ খুলেছেন শরিক জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমার। তাঁর মতে, ‘‘রাজ্যপাল যথেষ্ট সময় দিয়েছিলেন। তার মধ্যে কেউ সরকার গড়তে না পারলে রাষ্ট্রপতি শাসন ছাড়া গতি কি?’’ এ দিকে সরকার না থাকায় সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থরা ত্রাণ পাচ্ছেন না ওই অভিযোগে রাজভবনের উদ্দেশ্যে পদযাত্রা করে অখিল ভারতীয় কিষাণ সভা ও নির্দল বিধায়ক বাচ্চু কাডু। ওই বিধায়ক ও কৃষকদের প্রথমে আটক করে পরে অবশ্য ছেড়ে দেয় পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement