গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
শিবির বদলানোর পুরস্কার? সেচ প্রকল্পের দুর্নীতিতে অজিত পওয়ারকে ক্লিন চিট দেওয়ার পথে মহারাষ্ট্র সরকার। দ্বিতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার তিন দিনের মাথাতেই সেচ দফতরের ন’টি দুর্নীতির এফআইআর বন্ধ করার নির্দেশ দিলেন দেবেন্দ্র ফডণবীস। যদিও মহারাষ্ট্র দুর্নীতি দমন শাখার দাবি, এই মামলাগুলির সঙ্গে অজিত পওয়ারের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর-এর কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু এমন সময় এই সিদ্ধান্ত নিলেন ফডণবীস, যাতে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।
শিবসেনা-এনসিপি কংগ্রেস যখন জোট বেঁধে সরকার গঠন প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছ, ঠিক সেই সময় শনিবার সাতসকালে কার্যত লোকচক্ষুর আড়ালে শপথ নেন দেবেন্দ্র ফডণবীস এবং অজিত পওয়ার। ফডণবীস মুখ্যমন্ত্রী এবং অজিত উপমুখ্যমন্ত্রীর পদে শপথ নেন রাজভবনে। রাতারাতি শিবির পাল্টে ফেলার সময়ই গুঞ্জন ছিল, সেচ প্রকল্পের দুর্নীতিতে জেলযাত্রা থেকে বাঁচতেই ফডণবীসের কাছে কার্যত আত্মসমর্পণ করেছেন অজিত। সেই জল্পনার কারণও ছিল। মহারাষ্ট্রে ভোট প্রচারে দেবেন্দ্র ফডণবীস এই অজিত পওয়ারকেই দুর্নীতির ইস্যুতে টার্গেট করেছিলেন। বলেছিলেন, অজিত পওয়ারকে জেলে যেতেই হবে।
এ দিন মহারাষ্ট্র সরকারের এই সিদ্ধান্ত সামনে আসার পরেই সেই জল্পনা চরম আকার নেয়। মহারাষ্ট্র সরকার সূত্রে খবর, ৭০ হাজার কোটির সেচ দুর্নীতিতে মোট ২০টি এফআইআর দায়ের হয়েছিল। অধিকাংশ এফআইআর-এই নাম ছিল অজিত পওয়ারের। তার মধ্যে এ দিন ৯টি এফআইআরের তদন্ত বন্ধ করার সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছে ফডণবীস সরকার। তার পরেই রাজনৈতিক শিবিরে এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে যে, তবে কি শিবির পাল্টানোর ‘নজরানা’ পেলেন অজিত।
যদিও মহারাষ্ট্র দুর্নীতি দমন ব্যুরোর ডিজি একটি সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেছেন, ‘‘সেচ দফতরের দুর্নীতি নিয়ে আমরা প্রায় ৩০০০ অভিযোগের তদন্ত করছি। এগুলির সবই রুটিন তদন্ত এবং সেগুলি বন্ধ করা হয়েছে। তবে যেগুলির তদন্ত চলছিল, সেগুলি নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনেই চলছে।’’ একই সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘যে এফআইআরগুলি বন্ধ হয়েছে, তার সঙ্গে মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ারের কোনও সম্পর্ক নেই।’’
আরও পড়ুন: মহা-নাটকে ফের ‘নৈশ অভিযান’! গুরুগ্রামের হোটেল থেকে ৪ বিধায়ককে ‘উদ্ধার’ করল এনসিপি
আরও পড়ুন: রাজভবনে গিয়ে সরকার গঠনের দাবি জানাল শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস, জমা ১৬২ জনের সই করা চিঠি
ডিজি এই দাবি করলেও বিরোধীদের থামানো যায়নি। খবরটা সামনে আসতেই কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার টুইট, ‘‘এটা আশ্চর্যের নয় যে, বিজেপি-অজিত পওয়ার জুটি ‘জনস্বার্থে’ একমাত্র যে সিদ্ধান্তটি নিয়েছে, তা হল দুর্নীতি ও অসঙ্গতি। এটাই জনগণের কাছে বিজেপির আদর্শ।’’ শিবসেনা নেত্রী প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী টুইটারে তোপ দেগেছেন, ‘‘...অস্থায়ী মুখ্যমন্ত্রী প্রথম যে নির্দেশে সই করেছেন, সেটা হল উপমুখ্যমন্ত্রীকে ক্লিন চিট দেওয়া।’’