উদ্ধব ঠাকরে-একনাথ শিন্ডে। ফাইল চিত্র ।
গুয়াহাটির হোটেলে আশ্রয় নেওয়া বিদ্রোহী বিধায়কদের কারও সরকারি নিরাপত্তাই প্রত্যাহার করা হয়নি। শনিবার দুপুরে এ কথা জানালেন মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা দিলীপ বলসে পাটিল। শনিবার সকালে বিদ্রোহী শিবিরের নেতা একনাথ শিন্ডে মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরকে চিঠি লিখে অভিযোগ করেছিলেন বিদ্রোহী বিধায়কদের সকলের পরিবারের নিরাপত্তা প্রত্যাহার করেছে মহারাষ্ট্র সরকার। পাশাপাশি, দলত্যাগ বিরোধী আইনে পদ খারিজের দাবি জানানো ১৬ জন বিধায়কের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা প্রত্যাহার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন শিন্ডে। এক পর শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত বলেন, ‘‘সরকারি বিধি অনুযায়ী বিধায়কেরা নিরাপত্তা পান। তাঁদের সেই নিরাপত্তা বহাল থাকবে। কিন্তু সাধারণ ভাবে বিধায়কদের পরিবারের সদস্যেরা সরকারি নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকারী নন।’’
‘‘নিজের লোকেরাই শিবসেনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে। তাই যাঁরা শিবসেনা ছেড়ে চলে যেতে চান, তাঁরা চলে যাক। আমরা নতুন শিবসেনা গড়ব।’’ জোট সরকারের মহাসঙ্কট পরিস্থিতিতে এমনটাই মন্তব্য করলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে।
শুধু মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রিত্ব নয়, তাঁর হাত থেকে শিবসেনার পতাকা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য রাজনীতির যুদ্ধে নেমেছেন বিদ্রোহী নেতা একনাথ শিন্ডে। গুয়াহাটির হোটেলে বসে দুই-তৃতীয়াংশের বেশি বিধায়ক পাশে নিয়ে নিজেদের ‘আসল শিবসেনা’ বলে দাবি করেছেন। এই পরিস্থিতিতে ‘নতুন শিবসেনা’ গড়ার ডাক দিলেন দলের সভাপতি তথা মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বাসঘাতকদের বিজেপি নিয়ে গিয়েছে। এ বার আমরা নতুন শিবসেনা গড়ব।’’ শনিবার দুপুরে দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক ডেকেছেন তিনি।
ঠাকরে শিবির এখনও সরকারের গরিষ্ঠতা না হারানোর দাবি করলেও, ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছেন বিক্ষুব্ধ শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডে। মহারাষ্ট্র থেকে শুক্রবার গুয়াহাটি আসেন শিবসেনার বিধায়ক দিলীপ লান্দে। ফলে শিন্ডে শিবিরে বিধায়ক সংখ্যা ৫০ জনের বেশি হয়ে গেল।
শিবসেনাকে শেষ করে দিতে চাইছে বিজেপি, একনাথ শিন্ডেকে একহাত নিয়ে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। শুক্রবার রাতে এক ভার্চুয়াল বার্তায় তিনি বলেন, কর্মীরা দলের ‘সম্পদ’। যত ক্ষণ তাঁরা সঙ্গে থাকবেন তিনি কারও পরোয়া করবেন না। উদ্ধব বলেন, বিদ্রোহী সেনা বিধায়কদের অভিযোগ, এনসিপি এবং কংগ্রেস শিবসেনাকে শেষ করে দিতে চাইছে। সে কারণে অনেকে আবার বিজেপি-র সঙ্গে যেতে চাইছেন। যাদের বিজেপিতে যাওয়া ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই তাঁরাই আসলে শিবসেনাকে শেষ করে দিতে চাইছেন। তিনি সরাসরি বিজেপির দিকে আঙুল তুলে বলেন, শিবসেনা হিন্দু ভোট ভাগ হতে দেবে না, আর তাতেই সমস্যায় পড়ছে বিজেপি।
মহারাষ্ট্রের জোট সরকারের মহাসঙ্কট অব্যাহত শনিবারও। বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী ক্রমশ শক্তি বৃদ্ধি করে চললেও, শুক্রবার সন্ধ্যায় সরকার বাঁচানোর উপায় খুঁজতে বৈঠকে বসলেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে এবং এনসিপির দুই নেতা শরদ ও অজিত পওয়ার। অন্য দিকে ঠাকরে শিবিরের উপরে চাপ বাড়াতে দলের প্রতীক ও নাম চেয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিদ্রোহী শিবসেনা বিধায়কেরা।