মধ্যপ্রদেশের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ। — ফাইল চিত্র।
মধ্যপ্রদেশের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনার ২৪ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। ঘটনায় কমপক্ষে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। অনেকে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। কম বেশি আহত হয়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়। তাঁদের এখনও বিস্ফোরণের সময়কার স্মৃতি তাড়া করছে। কেউ কেউ আবার কারখানা ছেড়ে পালানোর অভিজ্ঞতার কথা বলছেন।
মঙ্গলবার সকাল ১১টা নাগাদ ভোপাল থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে হরদা শহরের বৈরাগড় এলাকার মাগার্ধা রোডের উপর একটি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের সময় কারখানায় কাজ করছিলেন শতাধিক কর্মী। এক তলা, দোতলায় কাজ চলছিল। আচমকাই বিস্ফোরণ, ভেঙে পড়ে কারখানার বিল্ডিংয়ের অনেকাংশ।
কেউ কেউ পালাতে সক্ষম হন, কেউ পারেন না। দুর্ঘটনার আঁচ বুঝে পালিয়ে আসা এক কর্মী ৪৬ বছরের ইস্তিয়াক আলি ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’র সঙ্গে কথা বলার সময় জানান, ‘‘আমি কারখানার এক তলায় কাজ করছিলাম। দোতলায় ছিলেন প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ জন। বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এক তলার মেঝে ভেঙে ঢুকে যায়। হুড়োহুড়ি পড়ে যায় সকলের মধ্যে। আমি পালাতে পেরে ছিলাম। কিন্তু আমার অনেক সহকর্মীই পারেননি।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘কারখানার বাজির বিস্ফোরক তৈরির জায়গাতেই বিস্ফোরণ ঘটে। আমি যেখানে কাজ করছিলাম, সেখানেই বাজি তৈরির বিস্ফোরকের পাউডার মজুত ছিল। আমার সঙ্গেই ৩২ জন কাজ করছিলেন। তাঁদের মধ্যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে শুনলাম।’’
ইস্তিয়াকের চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। তিনি জানান, ‘‘নীচের তলায় আমরা যাঁরা কাজ করছিলাম তাঁদের মধ্যেই অনেকে পালাতে পেরেছিলাম। আমি চোখের সামনে আমার এক জন ২২ বছর বয়সি সহকর্মীকে চাপা পড়ে প্রাণ হারাতে দেখেছি।’’ আজিজ খান নামে আর এক কর্মী বলেন, ‘‘আমার ভাগ্য ভাল ছিল, আমি বাইরের দিকের একটা হলে কাজ করছিলাম। আমি বেঁচে গেলেও আমার বন্ধুদের মধ্যে দু’-তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।’’
বিস্ফোরণের ঘটনায় কারখানার মালিক-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের নাম সোমেশ আগরওয়াল, রফিক খান এবং রাজেশ আগরওয়াল। তাঁদের মধ্যে রাজেশই কারখানার মালিক। মঙ্গলবারের আচমকা বিস্ফোরণের ঘটনার জেরে প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় ওই এলাকা। খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে পুলিশ। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও ঘটনাস্থলে যায়। দমকলের বহু ইঞ্জিন আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে।