মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ। —ফাইল চিত্র
প্রথমে কড়া চিঠিতে বিজেপির বিরুদ্ধে ‘ঘোড়া কেনাবেচা’র অভিযোগ, তার পর রাজ্যপালের সঙ্গে সশরীরে গিয়ে সাক্ষাৎ। রাজভবন থেকে বেরিয়ে বিজেপির উদ্দেশে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘রাজনীতিতে করোনাভাইরাস’ ছড়িয়ে পড়েছে, আগে সেটার মোকাবিলা করতে হবে। বেঙ্গালুরুতে বিধায়কদের ‘বন্দি’ করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে আস্থা ভোটের আগে তাঁদের ফিরিয়ে আনার দাবি রাজ্যপালকে জানিয়ে এসেছেন কমল নাথ। অন্য দিকে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া তথা বিজেপি শিবিরেও চলছে আস্থা ভোটে সংখ্যা জোগাড়ের তোড়জোড়।
জ্যোতিরাদিত্য কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে থেকেই বেঙ্গালুরুর হোটেলে রয়েছেন কংগ্রেসের ২২ বিধায়ক। তাঁরা ইতিমধ্যেই ইস্তফা দিয়েছেন এবং স্পিকার নর্মদাপ্রসাদ প্রজাপতিকে। কিন্তু স্পিকার জানিয়েছেন তাঁর সামনে হাজির হয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিতে হবে। শুক্র থেকে শনিবারের মধ্যে তাঁদের হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্পিকার। জ্যোতিরাদিত্য শিবিরের খবর, আজ শুক্রবারই তাঁরা হাজির হতে পারেন ভোপালে।
গত রাতেই হোলির ছুটি কাটিয়ে ভোপালে ফিরেছেন রাজ্যপাল লালজি টন্ডন। আর সকালেই রাজভবনে হাজির হন কমল নাথ। শুক্রবার প্রথমে রাজ্যপাল লালজি টন্ডনকে একটি চিঠি লেখেন কমল নাথ। তাতে তিনি অভিযোগ তুলেছেন, মধ্যপ্রদেশে বিজেপি অনৈতিক ও বেআইনি কাজ করেছে। রাতের অন্ধকারে বিধায়কদের বেঙ্গালুরু উড়িয়ে নিয়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ তুলেছেন। মধ্যপ্রদেশে বিধানসভার অধিবেশনের দিন স্থির হয়েছে ১৬ মার্চ। তার আগেই ওই বিধায়কদের বেঙ্গালুরুতে ফিরিয়ে আনার দাবি তুলেছেন তিন পাতার ওই চিঠিতে। ‘গণতন্ত্র বিপন্ন’ বলে উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘‘বিধায়করাই যখন বন্দি, তখন কী ভাবে আস্থা ভোট করা সম্ভব। আগে তাঁদের মুক্ত করে এখানে (ভোপালে) আনুন। তাঁরা যদি স্বেচ্ছায় গিয়ে থাকেন, তাহলে কেন সংবাদ মাধ্যমের সামনে আনা হচ্ছে না?’’
আরও পড়ুন: সাত মাস পর ছাড়া পাচ্ছেন ফারুক আবদুল্লা, ওমর-মেহবুবারা এখনও বন্দি
তবে আস্থা ভোটের জন্য যে কংগ্রেস প্রস্তুত, তা নিয়েও আশ্বাস দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। লিখেছেন, ‘‘কংগ্রেসের দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে আস্থা ভোটকে স্বাগত জানাই। মধ্যপ্রদেশের জনতাকে আশ্বস্ত করতে চাই, সরকার টিকিয়ে রাখতে এবং গণতন্ত্র, সংবিধান ও সাংবিধানিক প্র্রক্রিয়ার স্বার্থে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখব না।’’
আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরুতে করোনা আক্রান্ত গুগলের কর্মী, গ্রিস থেকে ফিরেই সংক্রমণ
২৩০ আসনের মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় দু’টি আসন খালি। ২২ জন ইস্তফা দিয়েছেন। ফলে মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০৬। ম্যাজিক ফিগার ১০৪। কংগ্রেসের হাতে সব মিলিয়ে ছিল ১২০ বিধায়ক। এ বার এই ২২ জনের মধ্যে কয়েক জনকে দলে ফেরাতে পারলে সরকার টিকিয়ে রাখা যেতে পারে— এই অঙ্কেই তাঁদের ভোপাল ফেরানোর দাবি জানিয়েছেন কমল নাথ। মুখ্যমন্ত্রীর শিবির সূত্রে খবর, বিদ্রোহী ২২ বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগের মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে কংগ্রেস।