দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই বাস। ছবি: সংগৃহীত।
রাতের খাওয়া সেরে ঘুমোতে গিয়েছিলেন বছর তিরিশের সুভাষ চৌধরি। বাসের দুলুনিতে অল্প সময়ের মধ্যেই গভীর ঘুমে ডুবে গিয়েছিলেন তিনি। অন্য যাত্রীরাও তখন ঘুমে মগ্ন। হঠাৎ জোর একটা ধাক্কা, তাতেই ঘুম ভেঙে যায় সুভাষের। ঘাড়ে, হাতে এবং পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন। দু’টি আসনের মাঝে আটকে গিয়েছিলেন তিনি। তত ক্ষণে চারপাশে ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার আর কান্নার রোল উঠেছিল।
শুক্রবার গভীর রাতে মধ্যপ্রদেশের রীবায় যে বাস দুর্ঘটনা হয়েছে, সেই বাসের যাত্রী ছিলেন সুভাষ। পেশায় দিনমজুর। দীপাবলি উপলক্ষে উত্তরপ্রদেশে বাড়িতে ফিরছিলেন। কিন্তু রীবার কাছে একটি ট্রাককে পিছন থেকে ধাক্কা মারে বাসটি। সেই ঘটনায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ৪০ জন যাত্রী। সেই বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের মধ্যেই এক জন সুভাষ।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তিনি বলেন, “দীপাবলির ছুটিতে বাড়ি যাচ্ছিলাম। ফলে মনে একটা আনন্দ ছিলই। তাড়াতাড়ি খেয়ে শুয়েও পড়েছিলাম। স্বপ্ন দেখছিলাম বাড়িতে পৌঁছেছি। সবাই খুব আনন্দ করছি। কিন্তু সেই স্বপ্নভঙ্গ হল মাঝপথেই। সেই স্বপ্ন যে এ ভাবে দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠবে তা ভাবতে পারিনি। কিন্তু বেঁচে ফিরছি, এটাই অনেক বড় পাওনা।”
সুভাষ জানান, প্রবল যন্ত্রণায় জ্ঞান হারানোর আগে তিনি দেখতে পান পাশের যে যাত্রীর সঙ্গে কিছু ক্ষণ আগেই কথা বলছিলেন তিনি নিথর হয়ে তাঁরই পাশে পড়ে রয়েছেন। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। হাতখানেক দূরেই দুই সহযাত্রীকে চোখের সামনে ছটফট করতে করতে মরে যেতে দেখলেন। চোখের সামনে এই দৃশ্য দেখে আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারেননি সুভাষ। তার পরেই দেখেন হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে। হাত-পায়ে ব্যান্ডেজ বাঁধা।