লোকসভায় পাস ইউএপিএ সংশোধনী। ছবি: পিটিআই
সন্ত্রাসবাদ রুখতে আরও একধাপ এগোল কেন্দ্র সরকার। বুধবার, বিরোধীদের তীব্র আপত্তির মধ্যেই লোকসভায় পাশ হয়ে গেল ইউএপিএ সংশোধনী বিল। বর্তমান আইনের সঙ্গে প্রয়োজনে ব্যক্তিবিশেষকেও সন্ত্রাসবাদী হিসেবে ঘোষণা করা যাবে, এই সংশোধনী আনতে আগ্রহী ছিল কেন্দ্র। এ দিনও তার পক্ষে সওয়ালও করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
বুধবার, বেলা সাড়ে ১২টার পর লোকসভায় ওঠে ইউএপিএ সংশোধনী বিল, ২০১৯। বিলে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ রুখতে প্রযোজনে যে কোনও রাজ্যে যেতে পারবেন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। সেজন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্যের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। ঠিক এই জায়গাটিতেই আপত্তি তুলেছে কংগ্রেস, তৃণমূল, এনসিপির মতো দলগুলি। তাদের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মানছে না কেন্দ্রীয় সরকার।
আজ সংসদে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র বলেন, ‘‘প্রতিবার যখনই তৃণমূল কোনও বিলের প্রতিবাদ করে তখনই তাদের গায়ে দেশদ্রোহী তকমা লেগে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। আমি কেন এমন ভয় পাব? জাতীয় সুরক্ষা নিয়ে কোনও ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে মতপার্থক্য হলে কেন বিরোধীদের দ্রেশদ্রোহী বলে দেগে দেওয়া হবে? হয় আমরা সরকার পক্ষের হয়ে বলব, না হলেই দেশদ্রোহী, আমাদের দেশের সব মানুষ এই তত্ত্বে বিশ্বাস করেন না।’’ সংশোধনী নিয়ে ব্যাখ্যার দাবি করেন তিনি। কিন্তু তা না মানায় ওয়াকআউট করেন তৃণমূল সাংসদরা।
আরও পড়ুন: কাশ্মীর নিয়ে ট্রাম্প-মোদির কোনও আলোচনা হয়নি, লোকসভায় বললেন রাজনাথ
কংগ্রেস-সহ একাধিক বিরোধী অবশ্য ইউএপিএ সংশোধনী বিলটিকে স্ট্যান্ডিং কমিটিতে পাঠানোর দাবি তুলেছিল। কিন্তু, তা না হওয়ায় ওয়াকআউট করেন কংগ্রেস, এনসিপি ও ডিএমকে’র সাংসদরা। ফলে, কিন্তু, এ দিন ২৮৭ সাংসদের সমর্থনে লোকসভায় পাশ হয়ে যায় ওই ইউএপিএ সংশোধনী বিল। আট সংসদ অবশ্য এর বিরোধিতা করেন।
সংশোধনী নিয়ে কংগ্রেসের আক্রমণের উত্তরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘‘যখন আপনারা প্রশ্ন তোলেন তখন দেখেন না মূল আইন বা সংশোধনী কারা এনেছে। কারা এটা কঠোর করে তুলেছে। এই আইনটি আপনারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন এনেছিলেন। তখন আপনারা ঠিক ছিলেন। আর আজ আমি যা করছি সেটাও ঠিক।’’
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় কমল নাথ সরকার ফেলে দিতে পারি, বিজেপি নেতার মন্তব্যে জল্পনা, লক্ষ্য কি এ বার মধ্যপ্রদেশ?
কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করতে পারা যাবে, ইউএপিএ সংশোধনীর মাধ্যমে ঠিক এই শক্তিই পেতে চাইছে কেন্দ্র সরকার। তা নিয়েও এ দিন সওয়াল করেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জে কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে জঙ্গি ঘোষণা করার প্রক্রিয়া আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন, পাকিস্তান বা ইজরায়েলও কাউকে সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও পারে। প্রত্যেকে পারে।’’
এরপরই তিনি বলেন, ‘‘এই বিল দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদ মুছে দেবে। এর অপব্যবহার হবে না। শহুরে মাওবাদীদের জন্য আমাদের কোনও সহানুভূতি নেই। আমরা তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করব।’’