হাসিনা বেগম। ছবি: টুইটার।
স্বামীর আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন হাসিনা বেগম। দেশে নিজের পরিবারের কাছে ফিরতে তাঁর লেগে গেল প্রায় দু’দশক। এই দু’দশক ধরে পাকিস্তানের জেলই হয়ে উঠেছিল তাঁর ঘরবাড়ি।
উত্তরপ্রদেশের ঔরঙ্গাবাদের বাসিন্দা হাসিনার বিয়ে হয়েছিল সহারানপুরের দিলশাদ আহমেদের সঙ্গে। দিলশাদের আত্মীয়স্বজন এখনও পাকিস্তানে রয়েছেন। 18 বছর আগে তাঁদের সঙ্গেই দেখা করতে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন হাসিনা।
হাসিনার বয়স তখন ৪৭ বছর। একাই পাসপোর্ট করিয়ে পাকিস্তানের লাহৌর পৌঁছে যান। কিন্তু পাকিস্তানে পৌঁছনোর পর নিজের পাসপোর্টটাই হারিয়ে ফেলেন কী ভাবে। পুলিশের কাছে তিনি নিজের পাসপোর্ট দেখাতে পারেননি। তার পর থেকেই পাকিস্তানের জেলে বন্দি হাসিনা।
এ দিকে হাসিনার খোঁজ খবর না পেয়ে সহারানপুরে তাঁর বাড়ির লোকজন পুলিশে ডায়েরি করেন। পাকিস্তান পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগও করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। হাসিনার খোঁজও পাওয়া যায়। কিন্তু দু’দেশের নানা নিয়মকানুনের বেড়াজালে এতদিন ওই জেলেই কাটাতে হচ্ছিল তাঁকে।
সম্প্রতি ১৮ বছর পর দেশে ফিরলেন তিনি। হাসিনার শরীর অনেক ভেঙে গিয়েছে। জেলবন্দি জীবনের ছাপ ফুটে উঠেছে মুখের বলিরেখার পরতে পরতে। চোখের দৃষ্টিও দুর্বল অনেকটাই। পরিবারের লোকদের ঠিকমতো চিনতে না পারলেও দেশের মাটিতে পা দিয়ে অনেক বেশি নিশ্চিন্ত হাসিনা। ঔরঙ্গাবাদ থানা থেকে পরিবারের লোকজন তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যান। ঔরঙ্গাবাদ পুলিশকে ধন্যবাদ দিয়েছেন হাসিনা এবং তাঁর পরিবার। দেশে ফিরে হাসিনা বলেন, “পাকিস্তানে আমাকে জোরজবরদস্তি জেলে রাখা হয়েছিল। অনেক কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি আমি। দেশে ফিরে শান্তি পাচ্ছি। মনে হচ্ছে স্বর্গে এসেছি।”
গত ১ জানুয়ারি ভারত এবং পাকিস্তান দু’দেশই বন্দিদের তালিকা প্রকাশ করে। ২৬৩ বন্দি পাক নাগরিক এবং ৭৭ মৎস্যজীবীকে পাকিস্তানে ফিরিয়ে দিয়েছে ভারত। একই ভাবে ৪৯ সাধারণ মানুষ এবং ২৭০ মৎস্যজীবীকে ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে পাকিস্তানও। এই তালিকায় ছিলেন হাসিনাও।