যোগী আদিত্যনাথ। ফাইল চিত্র।
‘ভগবান কৃষ্ণের স্বপ্নাদেশের’ পরে এ বার ‘তাঁর অভিশাপ’!
রামের সঙ্গে কৃষ্ণও এ বার ভাল রকম জড়িয়ে গিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের ভোট রাজনীতিতে। যোগী আদিত্যনাথ কোথা থেকে লড়বেন, সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ সিংহ যাদব এ বার সরকার গড়বেন কি না— এই সবই নাকি স্বপ্নে বলে দিচ্ছেন ‘ভগবান কৃষ্ণ’! ক’দিন ধরে বিজেপি-অখিলেশ এমন তরজা চলছিলই। আজ এক ধাপ এগিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ দাবি করলেন, ক্ষমতায় থাকতে যারা মথুরা-বৃন্দাবনের জন্য কিছুই করেনি, ভগবান কৃষ্ণ নিশ্চয়ই তাদের অভিসম্পাত দিচ্ছেন। বলার অপেক্ষা রাখে না, যোগীর নিশানা অখিলেশ-মুলায়ম সিংহদের দল এসপি। পূর্বতন সরকারকে ‘কংসের উপাসক’ বলে কটাক্ষ করেছেন যোগী।
এমনধারা ভোট তরজার শুরুটা করেছে গেরুয়া শিবিরই। বিজেপির রাজ্যসভা সদস্য হরনাথ সিংহ যাদব সম্প্রতি দাবি করেন, কৃষ্ণ তাঁকে স্বপ্নে বার্তা দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “গত রাতে দু’বার স্বপ্ন দেখলাম যে, যোগী আদিত্যনাথজির মথুরা থেকে ভোটে দাঁড়ানো উচিত। অনুভব করলাম, ভগবান কৃষ্ণ আমাকে এর জন্য মধ্যস্থতা করতে বলছেন।”
গোরক্ষপুর মন্দিরের প্রধান পুরোহিত তথা সেই কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদ যোগী ২০১৭-র বিধানসভা ভোটে লড়েননি। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে বিধান পরিষদে নির্বাচিত হয়েছেন। আগামী ফেব্রুয়ারির ভোটে যোগীকে অযোধ্যা বা মথুরার মতো হিন্দু তীর্থ থেকে দাঁড় করানোর চেষ্টা চলছে। দলের মতে, এতে হিন্দুত্বের জোরালো বার্তা দেওয়া যাবে ভোটারদের। মনে করা হচ্ছে, হরনাথের ওই ‘স্বপ্নাদেশ পাওয়া’ সেই সূত্রেই।
এর জবাবে অখিলেশ গত কাল বলেন, “কাল রাতে ভগবান কৃষ্ণ আমার স্বপ্নে এসে বলেছেন, তুমিই এ বার সরকার গড়তে চলেছ। প্রতি দিনই তিনি আমার স্বপ্নে আসেন।” এতেই যোগীর মুখে উঠে এসেছে কৃষ্ণের অভিশাপের কথা। অখিলেশ বা কারও নাম না করে তিনি আজ বলেন, “কিছু মানুষ নিশ্চয়ই স্বপ্নে ভগবান কৃষ্ণকে দেখছেন। নিশ্চয়ই তিনি বলছেন, নিজেদের ব্যর্থতার জন্য এখন অন্তত কেঁদে নাও। তোমরা যা করতে পারোনি, বিজেপি সরকার তা করেছে। ভগবান কৃষ্ণ নিশ্চয়ই তাঁদের অভিসম্পাত দিচ্ছেন ও বলছেন, তোমরা যখন ক্ষমতায় ছিলে, তখন মথুরা-বৃন্দাবনের মতো স্থানের জন্য কিছুই করোনি।”
কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের আগে কৌরব-পাণ্ডব উভয় পক্ষই কৃষ্ণের শরণ নিয়েছিলেন। ভোট-যুদ্ধেও তাঁরই শরণে দু’পক্ষ! ‘নরনারায়ণ’ কার পক্ষে রায় দেবেন সেটা জানেন না কেউই।