বাধা ঘুচল জিএসটির, সংসদে পাশ হল বিল

ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছিল ১৭ বছর আগে, অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায়। সারা দেশে অভিন্ন কর ব্যবস্থার লক্ষ্যে জিএসটি চালু করার কাজ শুরু করে মনমোহন সিংহের সরকার। তখন আবার বাধা দিয়েছিল বিজেপি। অবশেষে নরেন্দ্র মোদীর জমানায় সেই জিএসটি দিনের আলো দেখল। লোকসভায় পাশ হয়ে গেল জিএসটি চালুর জন্য চারটে বিল। এ বার উৎপাদন শুল্ক, আমদানি শুল্ক ও পরিষেবা কর তুলে দিয়ে ১ জুলাই থেকে অভিন্ন পণ্য-পরিষেবা কর চালু হলে তাতে দেশের কর ব্যবস্থায় আমূল বদল ঘটে যাবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৭ ০৩:৪২
Share:

লোকসভায় জিএসটি বিল পেশ অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির। ছবি: পিটিআই।

ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছিল ১৭ বছর আগে, অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায়। সারা দেশে অভিন্ন কর ব্যবস্থার লক্ষ্যে জিএসটি চালু করার কাজ শুরু করে মনমোহন সিংহের সরকার। তখন আবার বাধা দিয়েছিল বিজেপি।

Advertisement

অবশেষে নরেন্দ্র মোদীর জমানায় সেই জিএসটি দিনের আলো দেখল। লোকসভায় পাশ হয়ে গেল জিএসটি চালুর জন্য চারটে বিল। এ বার উৎপাদন শুল্ক, আমদানি শুল্ক ও পরিষেবা কর তুলে দিয়ে ১ জুলাই থেকে অভিন্ন পণ্য-পরিষেবা কর চালু হলে তাতে দেশের কর ব্যবস্থায় আমূল বদল ঘটে যাবে।

লোকসভায় আজ জিএসটি-র ৪টি বিল পাশের মাধ্যমে সংসদীয় ইতিহাসের একটি পর্বেও ইতি টানা হয়ে গেল। বিলগুলি নিয়ে এ বার রাজ্যসভায় আলোচনা হবে। সেখানেই সংসদে কর ব্যবস্থা নিয়ে যাবতীয় আলোচনায় কার্যত দাঁড়ি পড়বে। কারণ জিএসটি চালু হলে পরোক্ষ কর ঠিক করার ক্ষমতা আর কেন্দ্র বা রাজ্যের হাতে থাকবে না। চলে যাবে কেন্দ্র ও রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের নিয়ে তৈরি জিএসটি পরিষদের হাতে।

Advertisement

বিল পাশের পর অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, ‘‘১ জুলাই থেকে জিএসটি চালু করতে একটি কাজই বাকি রইল। তা হল, কোন পণ্যে কী হারে কর বসবে, তা চূড়ান্ত করা। ৪ রকম হার অবশ্য আগেই ঠিক হয়ে গিয়েছে।’’ লোকসভায় দাবি উঠেছে, জিএসটি পরিষদ করের হার ঠিক করলেও তাতে সংসদের সিলমোহর নেওয়া উচিত। জিএসটি বিলে অবশ্য সংসদকে এড়িয়ে যাওয়ারই কথা রয়েছে। কংগ্রেস, তৃণমূল ও বিরোধীরা এ নিয়ে সংশোধনী আনলেও ভোটাভুটিতে তা খারিজ হয়ে যায়।

প্রত্যাবর্তন: বিদেশ থেকে চিকিৎসা করিয়ে ফের সক্রিয় সনিয়া গাঁধী। বুধবার গেলেন সংসদেও। অজমেরে খাজা মইনুদ্দিন চিস্তির দরগায় চাদর পাঠাবেন। বুধবার সেই চাদর হাতে নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

বিরোধীদের আশঙ্কা ছিল, একের পর এক রাজ্যে জেতায় জিএসটি পরিষদেও বিজেপির অর্থমন্ত্রীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে উঠবেন। ফলে সংসদকে এড়িয়ে যে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন তাঁরা। জেটলির দাবি, জিএসটি পরিষদে ভোটাভুটি নয়, ঐকমত্যের মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতেও হবে।

আজকের পর্বটি মেটার পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। আর জেটলির মন্তব্য, ‘‘আমরা ইতিহাস তৈরির সাক্ষী রইলাম।’’ বিদেশ থেকে সদ্য ফেরা সনিয়া ও রাহুল গাঁধীও রাত পর্যন্ত লোকসভায় বসে সাক্ষী থাকলেন এর।

আরও পড়ুন: ঝাঁপ পড়ল কেএফসি-রও

তৃণমূল, সিপিএম— সব দলই জিএসটি-র পক্ষে থাকায় বিল ৪টি আজ ঐকমত্যের ভিত্তিতেই পাশ হয়। তবে রাজনীতির চাপানউতোর বন্ধ হয়নি। সব দলই ঝোল টানার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে। কংগ্রেসের বীরাপ্পা মইলি অভিযোগ তোলেন, ইউপিএ জমানায় বিজেপি বাধা না দিলে ৮ বছর আগেই জিএসটি চালু হতো। এই দেরির জন্য দেশের ১২ লক্ষ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।

‘এক দেশ, এক কর’-এর প্রচারও ‘মিথ’ বলে উড়িয়ে দেন মইলি। তাঁর বক্তব্য, একাধিক হারের কর ও সেস বসানো হচ্ছে জিএসটি-তে। আবাসন ক্ষেত্রের মতো কালো টাকার আঁতুড়ঘরকেই জিএসটি-র বাইরে রাখা হচ্ছে।

তৃণমূলের সৌগত রায় দাবি করেন, শিল্পমহল এখনও জিএসটি-র জন্য প্রস্তুত নয়। দামি বা পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকর পণ্যের উপর সেস বসিয়ে রাজ্যগুলি ক্ষতিপূরণের অর্থ জোগাড় করতে পারবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

আর অর্থমন্ত্রীর দাবি, জিএসটি মূল্যবৃদ্ধির হার কমাবে। পরে পেট্রোল-ডিজেলের মতো পণ্যকে এর আওতায় আনতে সংবিধান সংশোধন করতে হবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement