চিকিৎসা শিক্ষার সংস্কারে বিল পাশ

নরেন্দ্র মোদীর প্রথম দফাতেই বিলটি আনা হয়েছিল। লোকসভার মেয়াদ শেষ হতেই তা বাতিল হয়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৯ ০২:০৭
Share:

বিরোধীদের প্রবল আপত্তি, চিকিৎসক সমাজের একাংশের দেশ জুড়ে বিক্ষোভের মধ্যেই আজ লোকসভায় পাশ হয়ে গেল জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন বিল। মূলত দেশের চিকিৎসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে, মেডিক্যাল শিক্ষায় দুর্নীতি রুখতে, সময়োপযোগী ও সংস্কারমুখী পাঠ্যসূচি চালু করতেই বিলটি আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের জাতীয় প্রেসিডেন্ট শান্তনু সেনের দাবি, এই বিল আইনে পরিণত হলে মেডিক্যাল শিক্ষার গোটাটাই নিয়ন্ত্রণ করবে কেন্দ্র।

Advertisement

নরেন্দ্র মোদীর প্রথম দফাতেই বিলটি আনা হয়েছিল। লোকসভার মেয়াদ শেষ হতেই তা বাতিল হয়ে যায়। নতুন যে বিলটি আনা হয়েছে, তার বক্তব্য, সাড়ে চার বছর পড়ার পরে মেডিক্যাল পড়ুয়াদের ‘ন্যাশনাল একজিট টেস্ট’ বা ‘নেকস্ট’ দিতে হবে। এটিই তাঁদের বার্ষিক পরীক্ষা, আবার উচ্চতর পাঠ্যক্রমে যাওয়ার ছাড়পত্রও। ভারতীয়রা বিদেশে ডাক্তারি পড়ে এলেও এ দেশে চিকিৎসা করতে চাইলে ওই পরীক্ষা দিতে হবে। অকৃতকার্য হলে পরের বছর ফের পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকবে।’’

ভর্তির জন্য গোটা দেশে একই পরীক্ষা নিট। ডিএমকে সাংসদ এস সেন্থিলকুমার অভিযোগ করেন, নিটের পাঠ্যক্রম মূলত সিবিএসসি-নির্ভর হওয়ায় তামিলনাড়ুর বহু পড়ুয়া ফি বছর পিছিয়ে পড়ছে। একই সমস্যা পশ্চিমবঙ্গেও। পাঠ্যক্রম বদলের প্রস্তাবে আমল দেননি মন্ত্রী হর্ষ।

Advertisement

দেশে চিকিৎসকদের সংখ্যা বাড়াতে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ খোলার উপরে এই বিলে জোর দিয়েছে সরকার। আগের বিলে ছিল, নতুন মেডিক্যাল কলেজগুলির সমীক্ষা হবে তিন বছরের মাথায়। নতুন বিলে সেই সময়সীমা তুলে নেওয়া হয়েছে। আরএসপির এম কে প্রেমচমন্দ্রনের কথায়, ‘‘নির্দিষ্ট মানে পৌঁছানোর প্রশ্নে কলেজগুলির সামনে কোনও সময়সীমা থাকল না।’’ বেসরকারি কলেজে অর্ধেক আসন গরিবদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। বাকি আসনে ফি ঠিক করবে কলেজগুলিই। ওই আসনে কেবল ধনীরাই সুযোগ পাবে বলে সরব হন বিরোধীরা। সরকারের বক্তব্য, মেডিক্যাল কমিশন কলেজগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ রাখবে।

প্রশ্ন উঠেছে ওই কমিশনের ভূমিকা নিয়েও। আগে কমিশনে রাজ্য থেকে নির্বাচিতরাও সদস্য হতেন। নতুন বিলে নির্বাচনের পরিবর্তে সদস্যদের বেছে নেওয়া হবে। ফি বছর তাতে স্থান পাবেন রাজ্যের প্রতিনিধিরা। তবে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে। ওই সিদ্ধান্তের ফলে মেডিক্যাল শিক্ষার নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের হাতে চলে যাবে বলে সরব হন তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তিনি বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য যে যৌথ তালিকাভুক্ত বিষয় এবং এতে রাজ্যের ভূমিকা রয়েছে, সরকার তা ভুলে গিয়েছে।’’

বিলটির প্রতিবাদে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ও চিকিৎসকদের একাংশ আজ বিক্ষোভ
দেখান। সকালে এইমস থেকে প্রায় পাঁচ হাজার চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মী মিছিল করলে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। শ’তিনেক চিকিৎসক গ্রেফতার হন। পশ্চিমবঙ্গে কাল সব মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে এআইডিএসও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement